২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:২৩
সমাবেশ মঞ্চে মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতার গলায় ফুলের মালা এবং মালার সঙ্গে ১০ লাখ টাকার চেক দিয়ে আলোচনায় আসা বিএনপিকর্মীর অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, তার অ্যাকাউন্টের স্থিতি মাত্র মাত্র ৩ হাজার ৪১২ টাকা। নূর কাসেম (৩৭) নামের বিএনপির ওই কর্মীর বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের মান্দিয়াতা গ্রামে।
সুনামগঞ্জ–১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই নেতার নাম কামরুজ্জামান কামরুল। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার বাড়ি তাহিরপুর উপজেলায়।
গতকাল শনিবার বিকেলে নির্বাচনী এলাকা জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারে আয়োজিত এক সমাবেশ মঞ্চে বিএনপির কর্মী নূর কাসেম নির্বাচনে খরচের জন্য কামরুজ্জামানের হাতে ১০ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন। চেকটি হাতে নিয়ে সমাবেশে থাকা নেতা–কর্মীদের দেখান কামরুজ্জামান।
নূর কাসেম সম্পর্কে জানা গেছে, তিনি মূলত পেশায় কৃষক। তবে ইট কেনাবেচার ছোটখাটো ব্যবসা আছে তার। লেখাপড়া জানা নেই। কোনোমতে স্বাক্ষর করতে পারেন। তিনি বিএনপিতে তেমন সক্রিয় না হলেও তার বাবা প্রয়াত মো. সামসুদ্দিন বিএনপির রাজনীতি করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে আছে।
নূর কাসেম জানান, বর্তমানে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩ হাজার ৪১২ টাকা আছে।
১০ লাখ টাকার চেক দেওয়ার বিষয়ে নূর কাসেম বলেন, ‘আমি ওনারে (কামরুল) ভালা পাই। উনি গরিবের লাগি ভালা। তাই মনের আবেগে দিছি। আমার অত টেকা নাই। এখন যদি মাইনসে কয়, এই টেকা দিত অইব, শ্রীপুর বাজারে আমার একটা ভিটা আছে, ইটা বিক্রি কইরা দিমু।’
তাহিরপুর থেকে জামালগঞ্জে গিয়ে কেন চেক দিলেন জানতে চাইলে নূর কাসেম জানান, তিনি সমাবেশ দেখতে গিয়েছিলেন। মানুষ দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে তিনি একটি মালা ও চেক তুলে দেন কামরুজ্জামানের হাতে।
এখন বিষয়টি নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন জানিয়ে নূর কাসেম বলেন, ‘আমি খারাপ মানুষ না। কাম করি খাই। আমার কোনো ধান্দা নাই। আমি শিক্ষিত না, রাজনীতি অততা বুঝিও না। মন থাকি ওনারে ভালা পাই। এর লাগি দিছি।’
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কামরুজ্জামান এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ওই কর্মী ভালোবেসে টাকা দিলেও তিনি নেবেন না। বিষয়টি তিনি নেতা–কর্মীদের ভালোবাসা হিসেবেই দেখছেন। কামরুজ্জামান বলেন, সমাবেশে হাজার হাজার লোক ছিলেন। কেউ ফুল, কেউ কাগজ, কেউ টাকার মালা দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউ ১০, কেউ ১০০, কেউ ৫০০ টাকার নোটের মালা দিয়েছেন। তেমনি নূর কাসেম হঠাৎ মঞ্চে এসে তাকে ১০ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছেন।
নূর কাসেমের বিষয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘এটি দলের প্রতি, আমার প্রতি তার (নূর কাসেম) ভালোবাসা। আমি তার ভালোবাসাটা গ্রহণ করব, চেকটি ফেরত দেব। আজ (রোববার) বিকেলে আমার একটি কর্মসূচি আছে, সেখানে ওই কর্মীর হাতে চেকটি তুলে দেওয়া হবে।’
আপনার মন্তব্য