১১ এপ্রিল, ২০১৬ ২০:৪৯
গরমের শুরুতেই দিনে ১৮/২০বার রেকর্ড পরিমাণ লোডশেডিং হচ্ছে বানিয়াচং উপজেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। গরমে কষ্ট না হলেও দৈনন্দিন কাজ আর পরীক্ষার্থীদের জন্য দুর্ভোগ হয়ে দেখা দিয়েছে এই ভয়াবহ লোডশেডিং। গত কয়েকদিন ধরে এর প্রকোপটা যেন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
বানিয়াচংয়ে ২৪ঘন্টার মধ্যে ২ঘন্টা স্থায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা স্থানীয় জনগন।এই অসহনীয় তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংও।অসহনীয় গরম আর লোডশেডিংয়ের ফলে মানুষের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে।
সন্ধ্যার পর দীর্র্ঘ সময় একটানা লোডশেডিং হচ্ছে। বানিয়াচংয়ে হঠাৎ করে লোডশেডিং বাড়ার পিছনে সাহজীবাজারের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ত্রুটিকে মনে করছেন ডিজিএম মিজানুর রহমান।অনেক পাড়া মহল্লায় দিনের সঙ্গে সমানতালে রাতেও বিদ্যুতের ভেলকিবাজি লক্ষ্য করা গেছে। এতে সেচ পাম্প চালাতে পারছেন না কৃষকরা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য।এর প্রভাব পড়ছে কলকারখানাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ।
গরম না আসতেই লোডশেডিং বাড়ায় সাধারণ গ্রাহকদের সামনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে,এখনই যদি এই অবস্থা সামনের পরিস্থিতি তাহলে কি হবে।গত রবিবার রাত সাড়ে দশটায় বিদ্যুৎ চলে গেলে পরের দিন সকাল দশটায় আসে এই বিদ্যুৎ।ফলে খুব কষ্ট করে ঘুমাতে হয়েছিল বানিয়াচংয়ের অপামর জনসাধারণকে।
পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মিজানুর রহমান জানান,বানিয়াচংয়ে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।তবে আবহাওয়া ভাল থাকলে আমরা ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে সক্ষম হব।তাপমাত্র বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যাটা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাই এভাবে লোডশেডিং না করে আমাদের কোন উপায় নাই। শুধু আমাদের এই অ লে নয় পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকটি অঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে।
এদিকে বানিয়াচংয়ের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন,দিনে ১৫ থেকে ২০ বার পর্যন্ত লোডশেডিং হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকেনা।অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
ব্যবাসয়ীরা সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেক সময় দোকানপাট বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। তাছাড়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ও এই লোডশেডিং অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। বানিয়াচংয়ে পল্লীবিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা এতই বেড়েছে যে বই খোলা আর বন্ধ করার মত অবস্থা। এই আছে তো এই নেই। বিশেষ করে বানিয়াচং বড়বাজারের দিকে বিদ্যুৎ থাকলেও নতুনবাজারের দিকে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকেনা বলে এক গ্রাহক জানান।
এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।বানিয়াচংয়ে বিদ্যুতের এমন পরিস্থিতি হলেও উপজেলার অনেক জায়গায় বন্ধ হয়নি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।অনেকেই চোরাই বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে টমটমের ব্যাটারি চার্জ,টিভি,ফ্রিজ,আয়রণ,হিটার নানারকম বিদ্যুৎ চালিত সরঞ্জাম ব্যবহার করছে।
যার ফলে বানিয়াচংবাসীতে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের বোঝা বইতে হচ্ছে।এলাকাবাসীর প্রশ্ন,এভাবে যদি এখন থেকেই এ তীব্র্র লোডশেডিং জনজীবনকে অতিষ্ঠ্য করে তাহলে সামনের দিনগুলোতে প্রচন্ড গরমের সময় জনজীবনে কি করুণ পরিণতি হবে।
এদিকে,বানিয়াচং উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে এক ধরণের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।যে কোন মুহুর্তে বানিয়াচংয়ে অবস্থিত পল্লীবিদ্যুতের অফিস ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের আক্রমণের শিকার হতে পারে।
এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে জনজীবনের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। ভেঙ্গে পরবে অর্থনীতি,ক্ষুন্ন হবে দেশের মর্যাদা। তাই এই ভয়াবহ লোডশেডিং থেকে প্রতিকারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এলাকার ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।
আপনার মন্তব্য