তপন জ্যোতি তপু, ছাতক

২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ১৮:৫৬

ছাতকে ফেসবুক স্ট্যাটাস কেন্দ্র করে ৫ দিন থেকে ৬ পরিবার একঘরে

ছাতকে সমাজপতিদের সামাজিক বিচারে সিংচাপইড় ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের পঞ্চায়েত কর্তৃক গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের পরিবার সহ ৬টি পরিবারকে ৫দিন থেকে একঘরে (সামাজিক বয়কট) করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মাস্টার মাসুক মিয়া ও সফিক উদ্দিনের মধ্যে রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ ও আদালতে মামলা চলে আসছে। রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি মাস্টার মাসুক মিয়ার পুত্র মাহবুব মিয়ার ফেসবুকের আইডি থেকে জিয়াপুর গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল জলিলকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত ২২ অক্টোবর শনিবার বেলা ২ ঘটিকার সময় স্থানীয় জিয়াপুর পরগনা বাজারে মাছ হাটায় গ্রামের পঞ্চায়েতের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের মুরব্বি নুর ইসলামের সভাপতিত্বে সফিক উদ্দিন, আনর উদ্দিন, রফিক উদ্দিন, লয়লুছ মিয়া, রমজান মিয়া সহ গ্রামের পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাস্টার মাসুক মিয়া ও তার আত্মীয়  তখলিছ মিয়া, আসাক মিয়া, খছরু মিয়া ও শাহ আলম সহ ৬টি পরিবারকে ৫দিন ধরে একঘরে (সামাজিক বয়কট) করে রাখা হয়েছে।

মাস্টার মাসুক মিয়ার স্ত্রী গুলেস্তা বেগম জানান, রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সফিক উদ্দিন গ্রামের পঞ্চায়েতের সহজ সরল মানুষদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ৬টি পরিবারকে একঘরে করে রাখার ঘোষনা দিয়ে পঞ্চায়েতের জায়গা দিয়ে চলাচল ও বাজারে আমাদের দোকান পাঠ খুলতে  নিষেধ করায় তাদের  ভয়ে বর্তমানে আমরা ৫দিন ধরে একঘরে গৃহবন্দি অবস্থায় আছি। তাদের ভয়ে আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে।

সফিক উদ্দিন জানান, মাহবুব তার ফেইসবুকের আইডি থেকে গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল জলিলকে নিয়ে কুটুক্তি করায় গ্রামের পঞ্চায়েত বিষয়টি নিষপত্তির জন্য বার বার চেষ্টার পরও মাহবুব পঞ্চায়েতের কথা না মানায় পঞ্চায়েত তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করেছে।

পঞ্চায়েত সভার সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, মাহবুব পঞ্চায়েতের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় তাদেরকে গ্রামের পঞ্চায়েতের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোঃ সাহেল বলেন, একঘরে  রাখার বিষয়টি অমানবিক। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশেক সুজা মামুন জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, আধুনিক সভ্যতার যুগে একঘরে রাখার কোন বিধান নেই। বিষয়টি সুষ্ট তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মাস্টার মাসুক মিয়ার পুত্র মাহবুব মিয়া বাদী হয়ে সফিক উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে গ্রামের ১৪জন বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  

আপনার মন্তব্য

আলোচিত