এমডি মুন্না, জগন্নাথপুর

০৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৮:৫৮

জগন্নাথপুরে মান্নানের ১০ প্রার্থী, ডনের ১১

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভক্ত জগন্নাথপুর আ. লীগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের বিভক্তি। এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন অনুসারীরা নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে প্রার্থী করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই বলয় থেকে পৃথকভাবে ২১ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা যায়, এই বিভক্তির শুরু হয় মূলত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সাল থেকে। তখন সামাদ পুত্র ডনকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না দিয়ে দেওয়া হয়েছিল এম.এ মান্নানকে। গত পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও এই দুই গ্রুপ পৃথক পৃথক নাম কেন্দ্র ও জেলা আওয়ামীলীগের কাছে পাঠিয়েছিলেন।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই একই পথে হাঁটছে এই দুই গ্রুপ। তাঁরা তাঁদের বলয়ের প্রার্থীদের বাচাই ও প্রস্তাবের জন্য পৃথক পৃথক বর্ধিত সভা করেন এবং বর্ধিত সভায় নিজ নিজ বলয়ের প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব করেন।

তবে জেলা আওয়ামীলীগের কাছে ডন বলয়ের লোকজন নাম প্রস্তাব করলেও এখনো মান্নান বলয়ের নাম প্রস্তাব করা হয়নি বলে জানা গেছে।

উভয় বলয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) নিজ নিজ বলয় বর্ধিত সভা করে। এমপি মান্নান বলয় সংগঠনের কার্যালয়ে বিকেলে প্রত্যেক ইউনিয়নের সভাপতি ও সম্পাদকদের নিয়ে এই সভা করে। সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এই সভায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, পাটলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা বিজন কুমার দেব, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা মুজিবুর রহমান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি লিটন তালুকদার।

এই বলয়ের নেতা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু বলেন, সভায় আমাদের অভিভাবক সিদ্দিক আহমদ উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থী চুড়ান্ত করার ব্যাপারে তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তা মেনে নেবো।

অপরদিকে, একই দিনে আজিজুস সামাদ ডন বলয় সভা করে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়। জগন্নাথপুর পৌর মিলনায়তনে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বর্ধিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মনাফ।

তাঁদের সভায় চেয়ারম্যান পদে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হরমুজ আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মিন্টু রঞ্জন ধর, পাটলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আঙ্গুর মিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বকুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ শেফুল আমীন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজেরা বারী, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমীন আক্তার পারুল ও শান্তনা বেগম এর নাম প্রস্তাব করা হয়। তাঁদের নাম জেলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এই প্রতিবেদকে জানিয়েছেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মনাফ।

তবে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত এখনো আমি শুনিনি। তাদের সিদ্ধান্ত জানার পর আমি এনিয়ে সংগঠনের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত