দেবব্রত চৌধুরী লিটন

০৫ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ২১:১৪

সুরঞ্জিতকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত সিলেট শহীদ মিনার

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানানো জন্য প্রস্তুত সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত করা হয়েছে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা ব্যক্তিদের শহীদ মিনারে প্রবেশ নির্বিঘ্ন করতে কালো কাপড় মোড়ানো বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সারিবদ্ধ পথ। কালো কাপড় দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। প্রবেশ পথে তৈরি করা হয়েছে কালো কাপড়ের তোরণ।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে সিলেটে শেষ শ্রদ্ধা জানানো মঞ্চ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বিপ্লব শ্যাম পুরকায়স্থ সুমন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণকে শোকের আবহে প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে প্রয়াত এ নেতার মরদেহ সিলেটে আনা হবে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায়। সকাল ১০টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা অর্পণের জন্য সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে তাঁর মরদেহ।

সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সোমবার সাড়ে ১১ টায় সুনামগঞ্জে, দুপুর ১টায় শাল্লা উপজেলায় ও ৩টায় দিরাই উপজেলায় সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হবে। পরে দিরাইয়ে নিজ বাড়িতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানান মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সিলেট আদালতের সহকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম।

রোববার ভোররাতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে তাঁকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। তার আগে শুক্রবার তাঁকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে গত মে মাসে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সুরঞ্জিত। এরপর আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন তিনি।

সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য। স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ চার দশকের প্রায় সব সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বামপন্থী এই নেতা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারপুরে। প্রথম জীবনেই বামপন্থী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া সুরঞ্জিত দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন।

সুরঞ্জিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি করার পর আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি। আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত