গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৭:১৪

গোয়াইনঘাটে ৪০টি মন্দিরে দুর্গা পূজার আয়োজন, ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সিলেটের গোয়াইনঘাটে ৩৯টি সার্বজনীন ও ১টি ব্যক্তিগতসহ মোট ৪০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলা সদরসহ সবকটি ইউনিয়নের মন্ডপগুলোতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিমা শিল্পীরা কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়। চলছে  প্রতিমার গায়ে রং আর শেষ মূহুর্তের তুলির আচড়।

সাড়ম্বরে দুর্গোৎসব পালনের লক্ষে গত বুধবার গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগের সাথে পুজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন আর থানা পুলিশের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গোয়াইনঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ দেলওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শনিবার থানা পুলিশের একটি টিম গোয়াইনঘাট শিব মন্দিরসহ বিভিন্ন পুজামন্ডপ পরিদর্শন করে পুজামন্ডপ সমুহের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দুর্গোৎসবের আয়োজনের সর্বশেষ খবর নেন।

এদিকে দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চলছে পূজার কেনাকাটা। উপজেলা সদরসহ সবকটি হাটবাজার সমুহে দূর্গাপূজা উপলক্ষে চলছে রংবেরংয়ের নতুন পোষাক বিকিকিনি। পোষাক বিপনী বিতান,বস্ত্রালয় সমুহেও বেড়েছে কেনাবেচা।

রোববার সরজমিনে পরিদর্শনকালে উপজেলার কয়েকটি মন্ডপে ঘুরে চোখে পড়ে প্রতিমা শিল্পীদের শেষ মুহুর্তের ব্যস্থতা। প্রতিমার সৌন্দর্য্যকে আরও সুন্দর ও বিকশিত করণে তারা নিরলসভাবে শেষ মুহুর্তের কাজ করে যাচ্ছেন।

গোয়াইনঘাট কেন্দ্রিয় শিববাড়ি পুজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিধান চন্দ্র চন্দ জানান, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করে এখন প্রতিমার রং আর তুলির আচড় চলছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর তরফে আমাদের সাথে সার্বিক সহযোগিতা ও খোজ খবর রাখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ গোয়াইনঘাট শাখার সভাপতি শুভাষ চন্দ্র পাল জানান, গোয়াইনঘাটের সবকটি ইউনিয়নের অতীতের ন্যায় সাড়ম্বরে দূর্গোৎসব পালনে এবারও সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান ,গোয়াইনঘাটের ৩৯টি সার্বজনীন ও ১টি ব্যক্তিগতসহ ৪০ মন্দিরে এবার পালিত হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। গত বছরের ৩০টি সার্বজনিন পুজামন্ডপের সাথে উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সুব্রত বাবুর বাড়িতে সার্বজনিন আরও একটি নতুন মন্ডপে দুর্গাপুজার ব্যবস্থা হয়েছে।  তিনি জানান, চা শ্রমিক বেষ্টিত উপজেলার জাফলং চা বাগান ও গুলনি চা বাগান মন্দিরের মন্ডপ ছাড়া আর কোন মন্ডপে বিশৃংখলার আশংকা নেই।

এদিকে উপজেলার সর্বত্র দূর্গাপূজায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রেখে স্বারদীয় দুর্গাপূজা পালনে গোয়াইনঘাট থানা প্রশাসনও আগাম উদ্যোগ নিয়েছে। গোয়াইনঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন শনিবার পুলিশের বিশেষ টিম নিয়ে সরজমিনে গোয়াইনঘাট কেন্দ্রিয় শিববাড়ি মন্দির পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, ১১টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ, ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ ও ১০টি সাধারণসহ মোট ৪০টি পূজা মন্ডপের শান্তি শৃংখলা বজায় রক্ষার্থে পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উপজেলার সবকটি মন্ডপের নিরাপত্তায় ২৪২জন আনসার, ৭৭জন পুলিশ সদস্যরা সরজমিনে অবস্থানে থাকবেন। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নে একজন অফিসারের তদারকি, মোটর সাইকেলে করে ইউনিফর্ম ও সাদা পোষাকে পুলিশের একাধিক বিশেষ মোবাইল টিম, চেক পোষ্ট বসিয়ে নজরদারীসহ পুজাকালিন সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, দুর্গোৎসব সাড়ম্ভে উপজেলা প্রশাসন তরফে সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। পুজামন্ডপ সমুহের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর তরফে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। আশা করা যায়, কোন ধরণের বিশৃংখলা ছাড়াই শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব এবং গোয়াইনঘাটে সুদীর্ঘকাল হতে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সু-সর্ম্পকও অব্যাহত থাকবে। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত