শাকিলা ববি

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:০৫

হবিগঞ্জে দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার ও নান্দনিক মণ্ডপে চলছে দুর্গোৎসব

আজ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী। চার দিনব্যাপী এ উৎসবের মূল পর্ব মূলত শুরু হয়েছে গতকাল মহাসপ্তমী থেকে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী-দর্শন, দেবীর পায়ে ভক্তদের অঞ্জলি প্রদান ও মহাপ্রসাদ গ্রহণ।

এবার হবিগঞ্জে ৬২৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সর্বজনীন পূজামণ্ডপ ৬০৯টি ও ব্যক্তিগত ১৬টি। হবিগঞ্জ পৌরসভায় ৩৫টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ৩১ ও ব্যক্তিগত ৪টি।

পৌর এলাকার পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এবার প্রতিমার পাশাপাশি মণ্ডপের প্রবেশদ্বার ও মণ্ডপের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি মণ্ডপে অসাধারণ শৈল্পিক মানসম্পন্ন অলঙ্করণ করা হয়েছে। মণ্ডপ অলঙ্করণে ধর্মীয় ইতিহাস ও প্রাচীন ঐতিহ্যের সাথে আধুনিক শিল্প ভাবনার সমন্বয় করে কাজ করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই মণ্ডপগুলো দেখতে সকল ধর্মের মানুষজন ভিড় করছেন।

বাঁশ-বেত, কোলা, চাটাই দিয়ে দেবী দুর্গার মুখ মণ্ডলের আদলে তৈরি করা হয়েছে শহরের কাটপট্টি এলাকার ‘মহাদেবী সংঘ’-এর মণ্ডপের প্রবেশদ্বার। কনটেম্পোরারি আর্ট ওয়ার্ক ব্যবহার খুব অল্প জিনিস দিয়ে দৃষ্টিনন্দন মহাদেবী সংঘের প্রবেশদ্বার।

শহরের ঘাঁটিয়া বাজার এলাকার ‘দুর্জয় সংসদ’-এর মণ্ডপে প্রবেশ করলে মনে হবে আপনি কোনও পদ্মফুলের বাগানে প্রবেশ করছেন। কনসেপশনাল আর্ট ব্যবহার করে মণ্ডপের ভিতরে পদ্মফুলের বাগানের আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

দুর্জয় সংসদের সভাপতি শংকর রায় বলেন, ধর্মীয় ভাবে দেবী দুর্গার সাথে পদ্ম ফুলের একটি সংযোগ আছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই এবার পদ্মফুলের বাগান কনসেপ্টে আমরা মণ্ডপ অলঙ্করণ করেছি।

ঘাটিয়াবাজার এলাকার ‘আমরা কজন’ ও ‘বসুন্ধরা সংসদ’ এর যৌথ উদ্যোগে আরেকটি পূজামণ্ডপ সকলের নজন কাড়ে । ম-পটি দেখে মনে হয় কোনও রাজার বাড়িতে দুর্গাপূজা হচ্ছে। রাজকীয় অলঙ্করণে ককসীটের মাধ্যমে মণ্ডপে রাজকীয় আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নিখুঁত ভাবে।

পুরো হবিগঞ্জ শহর ঘুরলে দেখা যাবে প্রতিটি মণ্ডপেই শিল্পের নতুন মাত্রার সংযোজন। ঐতিহ্য ও শিল্পের যূথবদ্ধতা মণ্ডপ অলংকরণে ব্যবহার করায় প্রতিটি মণ্ডপ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ। দেখছে শিল্পের নবতর বিন্যাস।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ থেকে বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছেন নবনীতা দাশ। তিনি বলেন, এবারে মণ্ডপগুলো অনেক দৃষ্টিনন্দন। মণ্ডপের প্রবেশদ্বার থেকে ভিতর সব কিছুর সাজসজ্জাই আকর্ষণ করে।

নবনীতা আরও বলেন, ২ বছর আগে একবার হবিগঞ্জে দুর্গাপূজায় এসেছিলাম। তখন দেখেছি সবাই সাধারণ ডেকোরের্টাস দিয়ে পেন্ডেল করে দুর্গার প্রতিমা বসিয়ে পূজা করতেন। কিন্তু এবার বেশিরভাগ পূজামণ্ডপেই কৃষ্টি আর শিল্পকে ব্যবহার করে নতুনত্ব আনা হয়েছে।

দুর্গাপূজাকে ঘিরে ইতিমধ্যে সারা জেলায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। জাতিধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সবাই এ উৎসব আনন্দে মেতে উঠেছে। মণ্ডপগুলোর আধ্যাত্মিক ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখেই চলছে সবাই উৎসব করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত