ওসমানীনগর প্রতিনিধি

১০ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:২০

ওয়ারেন্ট জালিয়াতি মামলায় বিএনপির নেতা ফখরুল ইসলাম রিমান্ডে

সিলেটে ওয়ারেন্ট জালিয়াতির মামলায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারুককে ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট কারাগার থেকে ফারুককে নিয়ে আসেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তপন কান্তি দাশ।

এর পূর্বে আদালতের নির্দেশে ওসামনীনগর থানায় ফখরুল ইসলাম ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর পর গত ৬ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম এর আদালতে ৭দিনে রিমান্ডের আবেদন করেন।

আবেদনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার আদালত ফারুকের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আগামী ১২ ডিসেম্বর ফারুকের রিমান্ড শেষ হবে।

এ দিকে বিএনপি নেতা ফারুককে ওসমানীনগর থানায় চার দিনের রিমান্ডে গত শুক্রবার নিয়ে আসার পর থেকে ফারুককে রিমান্ড থেকে বাঁচাতে ও রিমান্ডের পুলিশি প্রতিবেদ তার পক্ষে নিতে কতিপয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি, সরকার দলীয় ও বিএনপি নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি বিভিন্ন স্তান থেকে খবর পেয়ে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গণমাধ্যম কর্মিরা সরজমিন ওসমানীনগর থানায় গিয়ে তদবিরকারী এসব প্রভাবশালীদের অবস্থানের সত্যতা পেয়েছেন বলেও এ প্রতিবেদককে একজন সংবাদকর্মি জানান। নাম প্রকাশ না করার সর্তে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও এর সত্যতা স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা বলেন, কে কি বলল সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে ওয়ারেন্ট জালিয়াতির মামলা তদন্ত ও রিমান্ডের প্রতিবেদন আইন অনুযায়ী সঠিক ভাবে করা হবে এখানে কোনো হেরফের করার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারুক তার নিজ দলের নেতা ওসমানীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদুর রহমানকে ভূয়া ওয়ারেন্টের মাধ্যমে গ্রেফতার করান। এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে  সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফারুকে গত ৩ ডিসেম্বর রাত ৯টায় সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজি আবদুল হান্নানের নির্দেশে ওয়ারেন্ট জালিয়াতির বিষয়টি তদন্ত করে বিএনপির ওই নেতার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আদালত।
এর পর নগরীর পাঠানটুলার বাসা থেকে সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে কোর্ট ইন্সপেক্টর নিজাম উদ্দিন চৌধুরী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হন তিনি এ জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িত।
এর আগে ওসমানীনগর থানা পুলিশ বুরুঙ্গা গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে উপজেলা বিএনপির সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা সেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক সাজ্জাদুর রহমানকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিআর ৭৯/১৫ নম্বর মামলায় গ্রেপ্তার করে রোববার আদালতে পাঠায় ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
এক পর্যায়ে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ও জাল ওয়ারেন্ট ইস্যুর বিষয়টি নজরে আসে আদালতের। এরপর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক নজরুল ইসলামকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

ডিবি পুলিশের সহায়তা নিয়ে তিনি তদন্ত করে দেখতে পান আদালতের বিচারক ও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষর জাল করে মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে জাল ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত