নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:২২

নিরবেই চলে গেলো ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস, ছিলো না কোনো আয়োজন

১১ ডিসেম্বর ১৯৭১। এইদিনে পাকহানাদার মুক্ত হয়েছিলো ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা।  তবে এবার নিভৃতেই চলে গেলো ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস। কোন আয়োজন, অনুষ্ঠান। কোনো কর্মসূচি ছিলনা এই দিবস উদযাপনে। শুধুমাত্র ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সীমাবদ্ধ ছিল এই দিনটি।

১১ ডিসেম্বর (সোমবার ) ফেঞ্চুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোন আয়োজন দেখা যায় নি। উপজেলা প্রশাসনও নেয়নি কোন উদ্যোগ।

ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্তদিবস পালন না হওয়ার কারণে বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরা একে অন্যকে দোষারূপ করছেন। এমনকি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও জানেন না কবে মুক্ত হয়েছিল ফেঞ্চুগঞ্জ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, আমি নতুন এই উপজেলায় এসেছি। তাই এই দিবস সম্পর্কে আমার জানা নাই।  কেউ আমাকে বলেও নি।  

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন বলেন, বিভিন্ন উপজেলামুক্ত দিবস পালনে সরকারী কোন নির্দেশনা নেই। আগেও তা ছিলোও না। তাই বিগত দিনে কখনো কোন আয়োজন করা হয়নি, এবারো হয় নি।

তবে এলাকাবাসী অনেকেরই অভিযোগ, সাইফুল্লাহ আল হোসাইন জামায়াত ইসলামের সক্রিয় নেতা। এ কারণে তিনি এসব কাজে আগ্রহী নয়।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, 'চেতনায় ফেঞ্চুগঞ্জ' ব্যানারে গত কয়েক বছর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অনেকেই এই ব্যাপারে ছিলেন উদাসীন। অনেকে ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস নিয়ে আলোচনা করতেও নারাজ।  

কেন ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন হলো না এ প্রশ্নে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শওকত আলী জানান, আমি অসুস্থ। তাই কোন প্রোগ্রাম করতে পারি নাই।

এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জের 'মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ' সভাপতি এম বদরুল ইসলাম ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতাদের উপর দোষ চাপিয়ে বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল যারা ক্ষমতা ভোগ করছে, তারাই এই দিবস ভালো ভাবে উদযাপন করার কথা। আমরা অরাজনৈতিক সংগঠন, আমরা না করলেও অসুবিধা নাই। কিন্তু করাটা উচিত ছিল। আগামীতে করব।

এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম জানান, ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামীগের মধ্যে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রেতাত্মা ঘাপটি দিয়ে বসে আছে। যতখন পর্যন্ত এই প্রেতাত্না বিতাড়িত করা না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত এ দিবস পালন করা সম্ভব হবে না।

ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা জানান, কয়েক বছর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন হয়েছে। এখন আর হচ্ছে না। এই দায় প্রবীণদের। আমরা যদি এমন আয়োজন না করতে পারি তবে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কখনোই পৌছে দিতে পারব না। ফেঞ্চুগঞ্জের স্বাধীনতার স্বপক্ষের প্রতিটি মানুষের ব্যর্থতা এই ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন না করতে পারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত