সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৮ ২৩:০২

ওয়াজের আয়োজনকারীরাই বাসাবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে

জৈন্তাপুরের সংঘর্ষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

কোরআন হাদিস বিরোধী বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় জৈন্তাপুরের ওয়াজ মাহফিলে হামলা এবং একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মাদরাসাতুল উলুম দারুল হাদিস হরিপুর বাজার মাদরাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই পরে বিভিন্ন বাড়িতে হামলা ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

বুধবার জামেয়া কাসিমুল উলুম হযরত শাহজালা (র.) দরগাহ মাদরাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মাদরাসাতুল উলুম দারুল হাদিস হরিপুর বাজার মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা নজরুল ইসলাম বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলার ১নং লক্ষিপুর আমবাড়ি গ্রামের জামে মসজিদে আয়োজিত সোমবারের (২৬ ফেব্রুয়ারি) ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন মাদরাসাতুল উলুম দারুল হাদিস হরিপুর বাজার মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মাওলানা আব্দুস সালাম। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মসজিদে উপস্থিত হন। এ সময় বক্তব্য রাখছিলেন মাওলানা গাজী সোলায়মান হোসেন। তার বক্তব্য কোরআন বিরোধী হওয়ায় মাওলানা আব্দুস সালাম আপত্তি করেন। সাথে সাথে সন্ত্রাসীরা তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি বলেন তারা রড লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে আক্রমন করলে হরিপুর মাদরাসার ২০/২৫ জন ছাত্র তাদের উস্তাদকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন। হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি মারধোর শুরু করে। এক পর্যায়ে হরিপুর মাদরাসার ছাত্র মৌলভী মুজম্মিল আলী ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। সন্ত্রাসীদের নারকীয় হামলায় ১৩ জন ছাত্র এবং ৩ জন সাধারণ মুসল্লি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তিনি বলেন, মাওলানা আব্দুস সালামের অবস্থা এখনও আশংকাজনক ও মৌলভী আব্দুল কাদের এখনও অজ্ঞান। মাওলানা নজরুল বলেন, আব্দুস সালামকে আশ্রয় দেওয়ায় মাওলানা নাসির উদ্দিনের বাড়িতেও সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাওলানা নজরুল বলেন, এখানে প্রায়ই সমঝোতার ভিত্তিতে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওহাবি-সুন্নি বিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব নিয়ে কিছুটা বিরোধ থাকলেও এখানে সমঝোতার ভিত্তিতে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই আমাদের কোন শংকা ছিল না। কিন্তু পরে পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে তারা প্রস্তুতি নিয়েই হামলা চালিয়েছিল।

বিভিন্ন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে মাওলানা নজরুল ও উপস্থিত অন্যান্য মাওলানাগণ জানান, মাহফিলে বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসল্লিরা এসেছিলেন। তারপর গোলাপগঞ্জ, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ইত্যাদি এলাকা থেকে লোকজন নিয়ে এসে হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই সন্ত্রাসীরা মানুষের ঘর-বাড়ি পুড়িয়েছে বলেই আমাদের ধারণা।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জমিয়ত নেতা মাওলানা শফিকুল হক আমকুনি, মাওলানা মুহিবুল হক গাছবাড়ী হুজুর, মাওলানা আতাউর রহমান, ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন, মাওলানা জয়নুল আবেদীনসহ হরিপুর মাদ্রসার অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্রবৃন্দ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত