নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ মার্চ, ২০১৮ ১৫:৫১

ফুফুর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন অভিযুক্ত বাবুল: র‍্যাব

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের কিশোরী বিউটি আক্তার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামী বাবুল মিয়া (২৯) বিয়ানীবাজার উপজেলার রামদা গ্রামের ফুফুর বাড়িতে আত্মগোপন করে আশ্রয় নেয়।

শনিবার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টায় গ্রেপ্তারকৃত বাবুল মিয়াকে নিয়ে সিলেট র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৯) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ।

এর আগে আগে শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাতে সাড়ে ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বিয়ানীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯।

স্কুলছাত্রী বিউটি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে এনিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে আসামিকে ধরতে তৎপর হয়ে উঠে আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনী। অবশেষে ১৫ দিনের মাথায় রামদা গ্রামে ফুফুর বাড়ি থেকে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ জানান। বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাকে শীঘ্রই হবিগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি। তবে বিউটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বাবুল ছাড়া আর কারা জড়িত এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি র‌্যাব।

তবে র‌্যাব-৯ এর মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান জানান, বাবুলের সঙ্গে ধর্ষণ ও হত্যায় আর কারা জড়িত, এ বিষয়ে জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

এর আগে স্কুলছাত্রী বিউটি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুলের শ্বশুর আব্দুল কাদির (৫০), খালা জহুর চাঁন বিবি (৬০) ও খালাত বোন ঝুমা আক্তারকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ফরিদ মিয়ার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইতোমধ্যে আলোচিত এই ঘটনা তদন্তে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৪) বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এরপর এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।

এ ঘটনায় গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানার বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।

এরপর বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে উপজেলার গুনিপুর গ্রামের তার নানার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে জোর করে তুলে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণের পর তাকে খুন করে লাশ হাওরে ফেলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ মার্চ তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা কলমচান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইলকে আটক করে। মূল হোতা বাবুলকে শুক্রবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত