কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

৩১ আগস্ট, ২০১৮ ১৭:৩২

কমলগঞ্জে প্রবাসীর বাসা দখল করে মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজারে প্রবাসীর নিজ বাসার দুই রুম জবরদখল সহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন লন্ডন প্রবাসী রিয়াজ করিম। তবে হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান শহীদ নিজেও পাঁচ শতক ভূমির মালিকানা দাবি করে উল্টো প্রতিপক্ষের হামলা ও হয়রানির দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রবাসী রিয়াজ করিম বলেন, শমশেরনগর টি গার্ডেন মৌজার, এয়ারপোর্ট রোডের বি-ব্লকে, জেএল নম্বর ৪০, খতিয়ান নম্বর ৫২৩, দাগ নম্বর ৯৪৬ এর ১৪ দশমিক ৬৫ শতক ভূমিটি মো. আব্দুল খালিকের পুত্র প্রবাসী রিয়াজ করিম এর নিজ নামীয়। বর্ণিত বাসার দুটি কক্ষে নিজ আত্মীয় আব্দুল লতিফ এর স্ত্রী রাহেনা বেগম (৫০), পুত্র মো. হাবিবুর রহমান শহিদ (৩৪), মো. মুজিবুর রহমান (৩০) ও মুহিবুর রহমান মুহিত এর স্ত্রী সালমা বেগম (২৬) কে বাসার দুইটি রুম ভাড়া দেই। দেশে আসলে অবশিষ্ট দুই রুমে নিজে বসবাস করি। দেশে আসার পূর্বে তাদেরকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে নানা টালবাহানা শুরু করে। গত ২৯ জুন ৩ মাসের ছুটিতে শাশুড়ি মোছা. ফুলেছা আলম আলী (৬০) সহ দেশে আসার পর থেকে আমার বাসার ঐ দুই রুমে বসবাস করছি। এরপরও তাদেরকে আমার বাসা ছেড়ে দিতে বললে বাসা না ছেড়ে আরেকটি রুম দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। গত ১৯ আগস্ট আবারো বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বললে আমাকে মারপিট করতে উদ্যত হয়। খবর পেয়ে আমার খালা শমশেরনগর ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য শারমিন বেগম চৌধুরী, উনার স্বামী সৈয়দ ছালেক আহমদ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আব্দুল মুকিত চৌধুরী এসে আমাকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করেন।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, হাবিবুর রহমান শহিদ সহ দুই রুমে দখলকৃতরা আমার নামীয় বর্ণিত ভূমির মধ্যে জোর পূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করে ঐ জায়গা তাদের বলে দাবি করে। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করলে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মেনে তারা বর্ণিত ভূমি বেদখলে লিপ্ত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমার খালা শমশেরনগর ইউপি মহিলা সদস্য শারমিন বেগম চৌধুরী সামাজিক সমাধানের চেষ্টা করলে দখলকাররা উল্টো আমাকে ও আমার খালা শারমিন বেগম চৌধুরী ও উনার স্বামী সৈয়দ ছালেক আহমদকে অভিযুক্ত করে কমলগঞ্জ থানায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ ডায়েরী করে।

এছাড়াও মিথ্যা মামলা মোকদ্দমায় আমাদেরকে জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে নিরাপত্তা চেয়ে গত ৯ আগস্ট মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার বরাবরে পরবর্তীতে ১১ আগস্ট কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। ডায়েরী নম্বর ১০৬১। সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজ করিম বাসার দখলমুক্ত ও নিরাপত্তা দাবি করেন।

তবে অভিযোগ বিষয়ে বাসার দু’টি রুমে অবস্থানরত হাবিবুর রহমান শহিদ নিজে আতঙ্কগ্রস্ত দাবি করে বলেন, আমি নিজে অসুস্থ ও ঘরবৈঠকী মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে যে রুমে বসবাস করছি দানসূত্রে ও পাঁচ শতক ভূমির মালিক হিসাবে ঐ রুমটাই আমার দলিলে রয়েছে। আমি আমার জায়গায় বসবাস করছি। প্রবাসী তার লোকবল দ্বারা উল্টো আমাকে মেরে ফেলতে পারে, জোড়ে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিতে পারে এমন আশংকায় আমি মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ ও কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে বাধ্য হয়েছি। পরে রিয়াজ করিমও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, সালিশ বৈঠকের রায়ও মানার পরও আমাকে জোরপূর্বক আমার ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত