জামালগঞ্জ প্রতিনিধি

০৭ অক্টোবর, ২০১৮ ১৮:২০

ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যায় বেদেপল্লীর শিক্ষার্থীরা

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সোনাপুর বেদেপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে। প্রতিদিন এ গ্রামের শত শত সাঁতার না জানা শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি স্কুলে যেতে সাঁকো পারাপারের সময় তিন শিশু সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁশের সাঁকো দিয়েই গ্রামবাসীসহ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে আসছে। বর্ষা মৌসুমে সাঁকো পারাপারে ঝুঁকি আরো বেশি বলে জানান এলাকাবাসী। ঝড় বাদলের দিনে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা বই-পুস্তক, ব্যাগ কাঁধে ফেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার করতে গিয়ে ঘটছে হিতে-বিপরীত।

জানা যায়, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই খালের উৎস হচ্ছে পার্শ্ববর্তী গজারিয়া নদী। প্রতি বছরই গ্রামবাসীরা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করে থাকেন। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও এদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্টদের। তাই আগামী বর্ষা মৌসুমে আসার আগে এই খালে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।

বেদেপল্লীর সর্দার আকুল আলী বলেন, সাঁতার না জানা শিক্ষার্থীরা ১২ মাসই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। ২০১৭ সালে গ্রামের মুন্সি মিয়ার ২য় শ্রেণি পড়ুয়া একটি মেয়ে সাঁকো থেকে পানিতে পড়ে গুরুতর আহত হয়। সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়। গ্রামের পারভীন আক্তারের অপর একটি শিশু সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলে তাকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়। এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতেই আছে। বর্ষা হলে এ দুর্ঘটনা আরো বেড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আমার দাবি কোমলমতি শিশুদের কথা সুবিবেচনা করে আমাদের এই খালের ওপর একটি ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়া হোক। এটি আমাদের প্রাণের দাবি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. জেসমিন বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষকই প্রতিদিন একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। কখন কোন শিশু শিক্ষার্থী সাঁকো থেকে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আমরা প্রতিদিনই শিশুদেরকে সাবধানে চলাচল করতে উপদেশ দেই।

শিক্ষার্থী বন্যা, সুমাইয়া, পায়েল, তাজনাহার, শহীদুল, আশিক, ফাহিম, তৌহিদুল, রাব্বীল জানায়, তারা সাঁকো পারাপারে মারাত্মক ভয় তারা। ভয়ে ভয়ে প্রতিদিনই তাদেরকে স্কুলে আসতে এবং যেতে হয়।

এ নিয়ে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মমিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে এখানে স্থায়ী এবং নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার।

এ ব্যাপারে কথা হলে ইউপি চেয়ারম্যান মো.ফুল মিয়ার জানান, সোনাপুর বেদেপল্লীর স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা ও গ্রামবাসীরা যাতে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন সে ব্যাপারে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা ওই খালে স্থায়ী একটা বাঁধ দেয়ার চিন্তা করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত