দেবকল্যাণ ধর বাপন

০৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০৪

সিলেটে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গা পূজা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গা পূজা একেবারেই সন্নিকটে। আজ মহালয়া। পুজোর আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। ১৫ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গা পূজা।

শেষ সময়ে এসে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। এবার সিলেটে ৫৯৮টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসব পূজার প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের এখন দম ফেলবার জো নেই।

এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রতিমার কাজ। ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হলেও এখন চলছে রং তুলির কাজ। সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা।

এদিকে বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায় প্রতিমার সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে প্রতিমা শিল্পীরাই তৈরি করছেন পূজামঞ্চ।

দাড়িয়া পাড়ার প্রতিমা শিল্পী সুব্রত পাল বলেন, প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুরু হবে রং তুলির আঁচড়। প্রতিমাগুলো মনোমুগ্ধকর ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি আমরা। আমরা চাই সবার চেয়ে আমাদের প্রতিমা তৈরির কাজ সবচেয়ে ভালো হোক। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই সকল মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে পূজা কমিটির হাতে হস্তান্তর করতে পারবো।

তিনি বলেন, আমি আর আমার দাদা অনেক বছর ধরেই প্রতিমা তৈরি করছি। আমার বাবা-ঠাকুরদাদাও প্রতিমা তৈরি করতেন। বছরের ১২ মাসই প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা চালান বলে তিনি জানান। এ পেশায় অনেক শিল্পীই দিন দিন আগ্রহ কমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তবে দুর্গাপূজা এলেই তাদের কাজ বেড়ে যায় উল্লেখ করে বলেন,  এ সময়টাই আমাদের আয় করার সময়। এসময় কর্মচারীদের বেতন দিয়েও এসময়টাতে আমাদের বেশ কিছু টাকা আয় হয়ে থাকে।

শ্রীমঙ্গল থেকে এসে সিলেটের ৮টি মণ্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরি করছেন সাগর পাল। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার প্রতিমাগুলো একটু ব্যতিক্রম। এবার আকারেও অনেক বড় এবং রয়েছে নতুনত্ব। এ বছর তিনি ও তার বা শঙ্কর পাল মিলে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছেন। এসব প্রতিমা তৈরিতে তারা পারিশ্রমিক হিসেবে নিচ্ছেন ৪০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা।

তিনি জানান, এবার তার সাথে চারজন ও বাবার সাথে মোট পাঁচজন সহকারী কাজ করছেন।

তিনি আরো বলেন, উপযুক্ত সহকারী ও কারিগরের অভাবে এখন আর আগের মতো পূজা সংগঠকদের মনের মতো করে প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তারপরও বাবা ঠাকুরদার কাছ থেকে যখন এই কাজ শিখেছি কাজটাতো চালিয়ে যেতেই হবে।

এ ব্যাপারে সাগর পালের বাবা শঙ্কর পাল বলেন, এখন মাটি মেখে জীবিকা উপার্জন করতে আমদের মতো শিল্পীদের ঘরের ছেলেরাই আগ্রহী নয়। তাহলে অন্য পেশার মানুষ এখানে কেন আসবে? এ পেশায় এই একটি মৌসুম ছাড়া সারা বছর কোনো কাজ থাকে না। তখন কী করে দিন চলবে? সেই অনিশ্চয়তার কারণেই লোক কমে যাচ্ছে এ পেশায়। তাই স্বাভাবিকভাবেই কমছে প্রতিমার সংখ্যাও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত