নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ অক্টোবর, ২০১৯ ১৮:৫৭

ভারতের সাথে চুক্তিতে দেশের স্বার্থবিরোধী কী এমন হয়েছে, প্রশ্ন মেননের

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তিগুলো নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা। বিএনপিসহ বিভিন্ন মহল থেকে এসব চুক্তিকে দেশের স্বার্থবিরোধী আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানানো হচ্ছে।

তবে সম্পাদিত চুক্তিতে দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু দেখেন না সাবেক মন্ত্রী ও ওয়াকার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

রোববার সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে ভারতের সাথে সাম্প্রতিক চুক্তি সম্পর্কে মেনন বলেন, যে ত্রিপুরা মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের জনসংখ্যার চেয়েও অধিক মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে তাদের আট হাজার মানুষকে অল্পকিছু পানি দেওয়ায় দেশের স্বার্থবিরোধী কী এমন হয়েছে?

তিনি বলেন, বিএনপি প্রাকৃতিক গ্যা্স ভারতে রপ্তানি করার ব্যবস্থা করে ফেলেছিলো। সেদিন জাতীয় কমিটির লংমার্চ আর শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থানের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আর এবার প্রাকৃতিক গ্যাস নয় আমদানিকৃত। গ্যাস রপ্তানির চুক্তি হয়েছে।

রোববার বিকেলে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সিলেট জেলা শাখার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চলতি মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর ভারতে সফরে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে ৷

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, কিছু হলেই বিএনপি সরকার পতনের হুমকি দেয়। সব ইস্যুতেই আন্দোলন জমাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এবার আবারার হত্যার ঘটনার উপর ভর করেছে। অথচ আবারের সহপাঠিরাই বলছেন, কেউ যেনো এই হত্যাকে ইস্যু করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা না করে। আসলে বিএনপি জনগনের সমস্যা নিয়ে বিচলিত নয়, তাদের লক্ষ্য কি করে হারানো ক্ষমতা ফিরে পেতে পারে। কিন্তু তাদের ওই আন্দোলনে জনগনের সম্পৃক্ততা নেই।

তিনি বলেন, জনগন দুর্নীতি, দুবৃত্তায়ন, বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতার আস্ফালন নিয়ে বিভ্রান্ত কিন্তু এসব বিষয়ে বিএনপি নিরব। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে তাদের ইতিহাস আরও খারাপ। তারা পেট্রোল দিয়ে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। সাধারণ মানুষ এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি আর চায় না। পাশপাশি আজকে আমরা দেখছি দুর্নীতি, মাদক, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এখনও চলমান। আজ এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক সিকন্দর আলীর সভাপতিত্বে ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ইন্দ্রানী সেন সম্পার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেনন আরও বলেন, নারীর প্রতি নির্যাতন, হত্যা-ধর্ষন সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাই নারী পুরুষ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই অসম ব্যবস্থা ভাঙতে হবে।

রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, ভারতবিরোধী আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতিই বিএনপি-জামায়াতের পুঁজি। কিন্তু এদেশের মানুষ তা কখনো গ্রহণ করেনি।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার দাশ, সম্পাদক মমন্ডলীর সদস্য দীনবন্ধু পাল, ইব্রাহিম মিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সিলেট জেলা সভাপতি আরিফ মিয়া, সিপিবি'র সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমন, আদিবাসী নেতা দানেশ সাংমা, যুবনেতা আব্দুল্লাহ খোকন, আলমগীর হোসেন, শ্রমিক নেতা কাজী আফজাল হোসেন, নারীমুক্তি সংসদের সদস্য আকলিমা হোসেন, ছাত্র মৈত্রী সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা চৌধুরী প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত