হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বখাটেদের বেপোরোয়ারা মোটরসাইকেল চালানোতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। উপজেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন শতাধিক বখাটে মোটরসাইকেল নিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে। উঠতি বয়সী কিশোর, যুবকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা এমন বেপরোয়া বাইক চালিয়ে পথচারীসহ স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের বিরক্ত করছে। এদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুসহ বৃদ্ধরাও।

বানিয়াচং উপজেলার এক শ্রেণির উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা মোটরবাইকে চড়েই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বানিয়াচংয়ে গুরুত্বপুর্ণ রাস্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় খুব দ্রুত গতিতে আক্রমনাত্মকভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি করছে এরা। বিভিন্ন স্কুল কলেজের সামনে এসে বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে শিক্ষার্থীদের নজরে আসার চেষ্টা করে বাইক চালকরা। এমন বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে নিজে যেমন দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে তেমনি পথচারীদেরও প্রতিনিয়িত করছে আহত। জনবহুল এমনকি হাট-বাজারে এসে কানের কাছে জোরে গাড়ির হর্ণ বাজিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চালকরা।

এসব বাইক চালকদের বেশিরভাগ সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান এমনকি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী হওয়ায় তাদের কেউ কিছুই বলে সাহস পায় না। এদের অধিকাংশরই নেই যান চলাচলের ড্রাইভিং লাইসেন্স। নেই গাড়ির সঠিক কাগজপত্ররও। এরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং রাজনৈতিক পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কেউই এদের ব্যাপারে মুখ খুলে কিছু বলে না, প্রতিবাদও করেনা। আড়ালে তাদের ঘৃণা আর অভিসম্পাত করেই নীরব থাকে ভুক্তভোগী মানুষ।

গত সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বাইক দূর্ঘটনায় আহতের ঘটনা ঘটলেও থানা পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

পথচারী রুমান আহমেদ জানান, মোটরসাইকেল চালকদের কিসের যেন তাড়া থাকে। তারা একটু সময় কোথাও দাঁড়াতে রাজি নয়। বরং সময বাঁচাতে তীব্র হর্ন দিয়ে বেপরোয়া গতিতে রাস্তার উপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালায়। এদের এই দৌরাত্ম বন্ধ করতে আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ী জামিল হোসেন জানান, মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে একধরণের ক্ষমতার দাপট দেখানোর প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এসব থেকে পরিত্রান দরকার। শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান জানান, অনেক চালকরা মনে করেন মোটরসাইকেল মানেই গতি। বেশি গতি উঠালে যে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়, সেটা তাদের মাথায় থাকে না।

এসব বিষয়ে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার সামন্ত বলেন, বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই চেকপোষ্ট বসিয়ে এ সকল বখাটে ও লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল আটক করে মামলা দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ এ সকল চালকরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। থানা পুলিশ এ সকল চালকদের বিরুদ্ধে আগের চাইতে আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করবে।