শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২০ এপ্রিল, ২০২০ ১৯:২২

সড়কের পাশে রাতকাটানো বৃদ্ধকে ঘরে ফিরিয়ে দিলেন ইউএনও

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সড়কের পাশে রাত্রিযাপন করা সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

সোমবার (২০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও জনপ্রতিনিধির সহায়তায় পরিবারের খোঁজ পেয়ে পুত্র লিটন বৈদ্যের সাথে যোগাযোগ কর হয়। তাকে হবিগঞ্জ সড়কে ডেকে এনে তার হাতে পিতাকে তুলে দেন ইউএনও। ওই বৃদ্ধের নাম ধীরু বৈদ্য বলে জানান তার ছেলে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, এ লোকটি অনেকদিন যাবত সড়কের পাশে একটি বিপণি বিতানের বারান্দায় রাত্রিযাপন করতেন। দিনের বেলা যে যা দিতেন তাই দিয়ে কোনভাবে জীবনযাপন করতেন। এই করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় যখন মানুষ নিরাপদে থাকার জন্য ঘরে থাকছেন তখনও এ বৃদ্ধ ব্যক্তি সংকটকালেও পড়ে রয়েছিলেন খোলা আকাশের নীচে।

স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান মামুন ও ৩ নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় ঘটনাস্থলে সরেজমিনে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তাকে পরিবারের নিকট তুলে দিতে তৎপর হন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিকেলে তার পুত্র লিটন বৈদ্যের কাছে পিতার দায়িত্বভার অর্পণ করেন ইউএনও। এ সময় বৃদ্ধ ধীরু বৈদ্যের শ্যালকও উপস্থিত ছিলেন। তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজের পক্ষ থেকে কিছু অর্থসহায়তা প্রদান করেন এবং ভবিষ্যতে সরকারী সকল সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

এ ব্যাপারে পুত্র লিটন বৈদ্য বলেন, ‘আমার বাবা কিছুটা মানসিকভাবে অগোছালো, তাকে ঘরে রাখা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এরআগেও আমি তাকে পরিবারের সাথে রাখার চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি বের হয়ে চলে আসেন। আমি আমার বাবাকে পরিবারেই রাখতে চাই। ইউএনও মহোদয়ের নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ যে তিনি এই করোনার সময়ে আমার পিতার ‘ঘরে থাকা’ নিশ্চিতে এগিয়ে এসেছেন এবং সরকারিভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি যে করেই হোক আমার পিতাকে পরিবারের সাথে রাখব।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি এ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করি। করোনার এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধ ধীরু বৈদ্যকে তার পরিবারের নিকট তুলে দিতে সংকল্পবদ্ধ হই। খোঁজ নিয়ে পরিবারের সন্ধান পাই এবং তার পুত্র লিটন বৈদ্যকে ডেকে এনে পিতাকে পুত্রের দেখভালের নিমিত্তে তুলে দেই। আমরা চাই না, বাংলাদেশে গৃহহীন কেউ থাকুন। এ ব্যাপারে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করি পাশাপাশি এ বৃদ্ধ যাতে পারিবারের সবার সাথে থাকেন সে ব্যাপারে তার পুত্রকে জানিয়ে দেই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত