এসএম স্বপন, বেনাপোল

২০ মে, ২০২০ ১৯:৪৯

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে অব্যবস্থাপনায় সড়কে রাত্রিযাপন বাংলাদেশিদের

বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের নানা অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। তাদের অব্যবস্থাপনায় করোনার এ ক্রান্তিকালে দেশে ফিরতে অসুস্থরাও রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দুই দিন ধরে ইমিগ্রেশন এলাকায় রাস্তায় দীর্ঘ লাইনে রাত কাটাচ্ছেন।

তাদের মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ মে) হঠাৎ সহস্রাধিক যাত্রীকে একসাথে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ায় ভারত থেকে আসা এসব বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীদের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে শারীরিক পরীক্ষা শেষ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে দেশের মাটিতে পা রেখেও বাড়ি ফিরতে পারেননি অনেকে। তবে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা রাত জেগে কাজ করছেন দুই দিন ধরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ছাত্রপত্র দেওয়ার জন্য। বুধবার সকালে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আটকে থাকা যাত্রীদের সাথে কথা বলে ভারতে তাদের করুণ কষ্টের কথা উঠে আসে।

জানা যায়, ভারতে লকডাউনে আটকা পড়েন বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণের জন্য যাওয়া কয়েক হাজার বাংলাদেশি। ইচ্ছা থাকলেও লকডাউনে কড়াকড়ির কারণে তারা এতদিন ফিরতে পারেননি। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে আসায় তারা দূরদূরান্ত থেকে কেউ যানবাহনে আবার কেউ হেঁটে চেকপোস্টে আসেন। কিন্তু ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের কাজের ধীরগতি ও নানান টালবাহনায় এসব যাত্রীরা দুই দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তার ওপর রাত কাটাচ্ছিলেন। হঠাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সব যাত্রীকে এক সাথে ছেড়ে দেয় পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। এতে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্যপরীক্ষা শেষ না হওয়ায় তারা আটকা পড়েন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ইমিগ্রেশন ভবনে সংকীর্ণ জায়গায় ভারত ফেরত যাত্রীদের মধ্যে কোনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। ফলে যাত্রীদের পাশাপাশি বড়ধরনের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছেন ইমিগ্রেশন ভবনের পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার শুভাশিস জানান, ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এসব যাত্রীকে একসাথে বাংলাদেশে প্রবেশে করিয়ে দেওয়ায় ভিড় বেড়ে নানা অসুবিধা হচ্ছে। এত যাত্রীর চাপ, কোনোভাবেই তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ শেষ করতে রাতজেগে স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ফেরত আসা যাত্রীরা আপাতত ইমিগ্রেশন ভবনে অপেক্ষা করছেন। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে তাদের শারীরিক পরীক্ষা ও পাসপোর্টের কাজ চলছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি যাত্রীর পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করা হয়েছে। বাকিদের কাজ চলছে। তবে যাদের কাজ শেষ হয়েছে, লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায়, তারা ঘরে ফিরতে পারছেন না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত