বেনাপোল প্রতিনিধি

২৯ মে, ২০২০ ১৯:২৬

ছেলে বউয়ের নির্যাতনে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন বৃদ্ধা

করোনার এই মহামারির সময় শেষ বয়সে এসে এক বৃদ্ধা মায়ের যায়গা হয়নি ছেলে-বউয়ের সংসারে। বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চলতো বৃদ্ধা মায়ের উপর। তাই বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে বাড়ি ছেড়েছেন সুনতি হালদার নামের এই নারী। ভারতে ছোট ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য বেনাপোলে চেকপোস্ট এসেছিলেন। কিন্তু ছোট ছেলেও তাকে নিবে না বলে জানিয়েছেন। তাই প্রায় দশ দিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে পড়ে আছেন তিনি।

শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে এই মাকে দেখা যায়। দশ দিন ধরে অনাহারে-অর্ধাহারে এখানেই আছেন বলে জানান তিনি।

সুনতি হালদার জানান, তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে বাবুল হালদার থাকে বাগেরহাটের মড়লগঞ্জ উপজেলার হলগাপাড়া মহেশপুর গ্রামে। ছোট ছেলে ও দুই মেয়ে থাকে কলকাতায়। স্বামী নরেল হালদার থাকেন ভারতে, আর বাংলাদেশে বড় ছেলের সাথে থাকতেন তিনি। ছেলে বাবুল হালদারের সামনে তার স্ত্রী কথায় কথায় বিভিন্ন ভাবে তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। অবশেষে কষ্ট সইতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন ভারতে ছোট ছেলের কাছে যাবেন বলে। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় আটকে পড়ে আছেন সীমান্তের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে।

ছেলের বউ নির্যাতন করলেও পুলিশকে অভিযোগ দেয়নি কেন জানতে চাইলে সুনতি হালদার বলেন, এসব কথা বললে পুলিশতো আগে ছেলেকে ধরে নিয়ে যাবে। অনেক কষ্টে তাকে তিনি মানুষ করেছেন। পুলিশ তাকে মারবে, আঘাত পড়বে তার কলিজায়। সেটা তিনি দেখতে পারবে না বলে কাউকে বলেননি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মহাসিন হোসেন জানান, তিনি অফিস যাওয়ার পথে কদিন ধরে দেখছেন ওই বৃদ্ধ নারী প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে পরে আছেন। কয়েকবার খাবারও কিনে দিয়েছেন। বিষয়টি তিনি পোর্টথানা পুলিশও বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। এছাড়া তার পরিবারের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

বেনাপোল প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের নিরাপত্তা কর্মী আমিরুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ নারীর কষ্টের কথা শুনে তিনি ভারতে তার ছেলের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার ছেলে জানিয়েছে মাকে নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না। পরে ফোন কেটে দেন। আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত