২৩ এপ্রিল, ২০২০ ২১:০৮
সোমবার ২০ এপ্রিল ছয় সঙ্গীসহ যশোরের বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে মাদকের বৃহৎ একটি চালান নিয়ে বরিশালে আসার পথে ৮২ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল ও একটি মোটরসাইকেল সহ বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম সুমন (৪৪) বিজিবির হাতে আটক হলেও এ চক্রের মূল হোতা বুলেট খান তার অপর চার সহযোগীসহ কৌশলে পালিয়ে যায়। আর এ নিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বরিশাল র্যাবকে অবহিত করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পালিয়ে আসাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি র্যাব। তবে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে এই চক্রের মূল হোতাই হচ্ছে বুলেট খান।
গত শনিবার এই মাদক চক্রের ৬ সদস্য বরিশাল থেকে তিনটি মোটরসাইকেল বেনাপোলে আসে। এবং বেনাপোলে একদিন অবস্থান করে। এরপর বেনাপোল পোর্ট থানার সীমান্ত ঘেঁষা পুটখালী গ্রাম থেকে কাঁধে ঝোলানো স্কুল ব্যাগে ফেনসিডিল নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বেনাপোল শিকড়ি বটতলা নামক স্থানে আসলে বিজিবি তাদের গতি রোধ করে। এসময় সকলে নিজেদেরকে ডাক্তার, শিক্ষক ও আইনজীবী পরিচয় দেয়ার পর বুলেট ও লিখনসহ অপর তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সঙ্গীয় সুমনের পিঠে থাকা স্কুল ব্যাগ সন্দেহের বসত তল্লাশি করার পর বিজিবি বিস্মিত হয়। ততক্ষণে বুলেটসহ তার অপর সঙ্গীরা বিজিবির নাগাল থেকে বেড়িয়ে গ্রামীণ পথ ধরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন নিজেকে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। কিন্তু নিশ্চিত হওয়া গেছে আসলে তিনি ওই স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক। সুমনই পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিজিবির কাছে সবিস্তার নাম পরিচয় প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে লিখন ও বুলেট বাদে অপর ৩ জন হচ্ছেন- সদর হাসপাতালের ডাক্তার মিঠু, উত্তরা ব্যাংক কর্মকর্তা ডোনা ও ব্যবসায়ী মনির। এদের প্রত্যেকের বসবাস বরিশাল শহরে।
সূত্রমতে, গত বছর শবে বরাতের রাতে শহরের চৌমাথা এলাকায় ফেন্সিডিলসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল বুলেট। একাধিক সূত্র জানায়, তার অগ্রজ ভাই যুবলীগ নেতার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ডিবি পুলিশকে বাগে নিয়ে এসে বুলেটকে ছাড়িয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বিজ্ঞাপন
ঘটনাচক্রে বুলেটের সাথে যুক্ত হয় বরিশাল আদালতের বিতর্কিত আইনজীবী লিখন। ফেন্সিডিল সেবনের দায়ে লিখনকে গত বছর বরিশাল আইনজীবী সমিতি তার সদস্যপদ বাতিল করে দেয়। বিজিবির একজন কর্মকর্তা জানান, এই চক্রটির সম্পর্কে বরিশাল র্যাব-৮ কে অবহিত করে তাদের আটকে অনুরোধ জানিয়েছে।
বরিশাল র্যাবের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য স্বীকার করে বলেন, চক্রটির সন্ধানে তারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। তারা নিশ্চিত হয়েছে এখনো তারা বরিশালে ফিরেনি। কিন্তু তাদের পরিচয়-পরিচিতি শোনে বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার মত নয় যে, আদৌতে তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। বুলেট এখন কোথায় তার কোন হদিস দিতে পারেনি কেউ; তার সেলফোনও বন্ধ।
আপনার মন্তব্য