নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মার্চ, ২০২০ ১২:৫৮

রোগী বাড়লে কি আমরা খুশি, প্রশ্ন মন্ত্রীর

গত জানুয়ারি মাস থেকে সরকার করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুতি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা বলছেন সমালোচনা করছেন তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেছেন, সংখ্যা বাড়লে কি আমরা খুশি হই?

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রোববার (২৯ মার্চ) অনলাইন ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এই আক্ষেপমেশানো প্রশ্ন করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, করোনাভাইরাস রোধে আমাদের প্রস্তুতি ছিল কি না। আমি বলতে চাই, আমরা জানুয়ারি মাস থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। ঢাকায় ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অনেকেই বলছেন, আমাদের দেশে সংখ্যা কম কেন? সংখ্যা বাড়লে কি আমরা খুশি হই?

তিনি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যথেষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে এ অবস্থা হতো না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুধু চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে। বিমানে যাতায়াত চলবে কি না, তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। ইউরোপ-আমেরিকার বায়ার অর্ডার ক্যানসেল করছে, এটিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেখার বিষয় নয়।’

হাসপাতালে ভেন্টিলেটর সুবিধার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৩৫০টি ভেন্টিলেটর আছে। আরও ২৫০টি ভেন্টিলেটর আসছে। বিশ্বের অনেক দেশেও এত ভেন্টিলেটর নেই।’

তেজগাঁওয়ে আকিজ গ্রুপের হাসপাতাল তৈরিতে স্থানীয়দের বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে সবাই এগিয়ে আসছে, এতে আমরা আনন্দিত। আকিজ গ্রুপ ভবন তৈরি করে দিতে চায়, তাতে সমস্যা না হয়, সেটা দেশবাসীর জন্যই সুবিধা হবে। আমাদের প্রয়োজন না হলে ব্যবহার করব না। আমাদের হাসপাতাল চিহ্নিত করা আছে। এরপরও প্রয়োজন হলে সেখানে রাখা যাবে। আমাদের মনে হয়, জনগণের সহনশীল হওয়া উচিৎ।’

করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি বাড়বে কি না এ বিষয়ে মন্ত্রী জানান, ছুটি বাড়বে কি না তা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। জানালেন, ‘আমি টেস্ট করিয়েছি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হইনি।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে কোয়ারেনটাইনে আছেন কি না সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো কাজ করছি। টেস্ট করিয়েছি, আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হইনি। আমি সেইভাবে কোনো রকমের আক্রান্ত নই, বিধায় আমি… কোয়ারেনটাইনের কথা বলব না, বাট আমি আছি। যেভাবে অন্যরা আছে সেভাবেই আমি আছি।’

গত ২৬ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের দপ্তরের এক কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

তিনি বলেন, ‘আপনারা যেটি শুনেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো অনেক বড় মন্ত্রণালয়। তাদের ওখানে অনেক লোকজন আসা-যাওয়া করে, ডাক্তার আসা-যাওয়া করে, বাইরের লোক আসা-যাওয়া করে… আমরা তো কাজ করি। কাজেই তাদের কারও হতে পারে, সেটি তো আছেই।’

এরআগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরের এক কর্মকর্তা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কোয়ারেন্টিনে যেতে বলা হয়েছে- শীর্ষক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর প্রকাশ হয়। ২৬ মার্চ এমন কিছু হয়নি বলে নাকচ করেছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. হাবিবুর রহমান খান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত