সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ নভেম্বর, ২০১৮ ২০:৩৩

সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশটা আমাদের সকলের। দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে এখন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের ব্যাংকুয়েট হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে আপনার এসেছেন জনগণের ভবন এই গণভবনে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য যে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের অব্যাহত রেখেছি, সে প্রচেষ্টা বাংলাদেশের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি। এই দেশটা আমাদের সকলের, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আমি এটার বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দেবো। দীর্ঘ ৯ বছর ১০ মাস হতে চললো আমরা সরকারে, এই সময়ের মধ্যে দেশে কত উন্নয়ন করতে পেরেছি সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন।

‘এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম সেই দিন বদল হচ্ছে এটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে’, বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন করে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সেই স্বাধীনতার সুফল যেন, প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্যে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।

এরআগে, সন্ধ্যায় ৬টা ২০ মিনিট থেকে গণভবনে প্রবেশ করতে থাকেন ঐক্যফ্রন্ট এবং আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্যাংকুয়েট হলে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাম পাশে বসেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তার পাশে একে একে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া। শেখ হাসিনার ডান পাশে বসেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার পাশে আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

সংলাপের টেবিলে প্রধানমন্ত্রীর ঠিক বিপরীতে আসন পেয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তার ডান পাশে বসেছেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু। এরপর একে একে বসেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও মির্জা আব্বাস। তাদের পাশে রয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ড. কামালের বাম পাশে বসেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার পাশে রয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

সংলাপে উপস্থিত যারা
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপে উপস্থিত রয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসীন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আ ব ম মোস্তফা আমিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সংলাপে ১৪ দলীয় জোট থেকে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে অংশ নেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় যে পাঁচজনের নামের তালিকা দেওয়া হয়, তাতে গয়েশ্বরের নাম ছিল। সব মিলিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ২১ নেতা সংলাপে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। গয়েশ্বর সংলাপে না যাওয়ায় ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত