তানভীর ইউসুফ রনী ও সদেরা সুজন, সিবিএনএ কানাডা থেকে

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২১:২৭

বাংলাদেশের মেয়েরা আজ এগিয়ে, কানাডায় প্রধানমন্ত্রী

কানাডার মন্ট্রিয়লে গ্লোবাল ফান্ড কনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, এইডস ও দারিদ্র মুক্ত পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া এই তিন রোগ প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী একশটি দেশে দ্রুত তৎপরতা চালাবে গ্লোবাল ফান্ড। ২০৩৩ সালের মধ্যে এই তিন রোগ সমূলে নির্মূল করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বিশ্ব নেতারা।

ফিফথ রিপ্লেনিসমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ) এর প্রথম দিনে। সম্মেলনের প্রথম দিনেই ২৫০ মিলিয়ন ডলার সংগৃহীত হয়েছে দাতাদের কাছ থেকে।

এসময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মেয়েরা আজ এগিয়ে। শিক্ষা, চাকুরী কিংবা ব্যবসায় মেয়েরাও সমান অংশীদার। মেয়েদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হয়েছে। মহিলাদের গর্ভকালীন মৃত্যু প্রায় ৭০% রোধ করা সম্ভব হয়েছে, সেই সাথে বাল্য বিবাহের সমস্যাও রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

মহিলাদের সাথে কোন ধরনের অত্যাচার কিংবা অবিচারের ক্ষেত্রে আমরা "জিরো টলারেন্স' নীতি অবলম্বন করার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বিশ্ব দাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে বাংলাদেশই এশিয়ায় বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ স্থান।

এসময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রূডো বাংলাদেশ সহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের পাশে সবসময় থাকার ঘোষণা দেন। এসময় তিনি বলেন যে, আমরা যদি একসাথে সবাই একই স্বার্থে কাজ করতে পারি তাহলে বিশ্বকে দেখানো সম্ভব আমরা কি করতে পারি।

বাংলাদেশ ছাড়াও এই সম্মেলনে সুইডেন, আইভরিকোস্ট, মালি ও সেনেগালের রাষ্ট্র প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ব নেতারাও তাঁদের দেশের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক উপস্থিত দাতাগোষ্ঠী ও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিঁয়ের এলিয়ট ট্রুডো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তাঁর সার্বিক সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তারই কৃতজ্ঞতা সরূপ সম্মেলনের প্রথমদিনের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে মরণোত্তর স্বাধীনতা স্মারক কানাডার প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন শেখ হাসিনা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাঁর বাবাকে এধরনের অকৃত্রিম সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এসময় তাঁরা একটি সংক্ষিপ্ত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায়ও মিলিত হন।

কানাডায় পলাতক বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারেও এসময় উভয় দেশের প্রধানদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

একই দিনে ‘রিমোভিং বেরিয়ার্স টু হেলথ থ্রো এম্পাওয়ারিং উইমেন অ্যান্ড গার্লস অ্যান্ড রিচিং দ্য মোস্ট মার্জিনালাইজড’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা-১ এবং ‘এনগেজিং অ্যান্ড মোবিলাইজিং ইয়ুথ টু মিট দ্য সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা-২-এ অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করবেন।

১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে (মন্ট্রিয়ল সময়) এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে মন্ট্রিয়ল ত্যাগ করে একই দিনে নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নেবেন তিনি।

নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি সম্পন্ন করে ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত