সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ মার্চ, ২০১৭ ১৩:৫৮

বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত চেয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশি কিশোরীর চিঠি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে অনুরোধ করেছে কানাডায় বসবাসরত এক বাংলাদেশি কিশোরী। জাস্টিন ট্রুডোর কাছে লেখা এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানায় ১৪ বছর বয়সী মাশকুরা তাবাসসুম তাথৈ।

কানাডার অন্টারিও থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষার অনলাইন 'নতুনদেশ ডটকম' এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বর্তমানে কানাডার ম্যাপল রিজ স্কুলের গ্রেড-৮ এর ছাত্রী এবং স্কুলের ছাত্র সংসদের বর্তমান নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছে মাশকুরা তাবাসসুম তাথৈ। ২০১২ সালের ২৮ আগস্ট গ্রেড-৪ এর ছাত্রী থাকা অবস্থায় তাথৈ তার বাবা-মার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পাড়ি জমায়।

চিঠিতে মাশকুরা লিখেছে, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নুর চৌধুরী কানাডাকে তার নিরাপদ আশ্রয় বানিয়ে ফেলেছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নুর চৌধুরী টরেন্টোতে নির্ঝঞ্ঝাট জীবন যাপন করছে। কানাডার মতো একটি দেশ নুর চৌধুরীর মতো আত্মস্বীকৃত খুনির নিরাপদ আবাসস্থল হতে পারে না।

জাস্টিন ট্রুডোর প্রতি লেখা ওই চিঠি মাশকুরা আরও বলে, এই খুনিকে বাংলাদেশ ফেরত না পাঠালে পৃথিবীর অনেক মানুষই ভাবতে পারে, যেকোনো মারাত্মক ক্রাইম বা যে কাউকে খুন করে কানাডায় চলে আসলে তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না। বরং নিরাপদে বসবাস করার জন্য কানাডিয়ান সরকার সকল ব্যবস্থা নিবে।

মাশকুরা লিখেছে, 'অন্যদের মতো আমিও আশায় বুক বেঁধে আছি, মানবতাবিরোধী অপরাধ করা নুর চৌধুরীকে অচিরেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে, যাতে করে সে তার সাজা ভোগ করতে পারে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার দায়ে নুর চৌধুরীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেয়। আসামিদের অনেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। নুর চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানো হলে এক্ষেত্রেও ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

মাশকুরা প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে তার বাবা ই ট্রুডোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে লিখেছে, '১৯৭০ সালে নির্বাচনের পরে তৎকালের পাকিস্তানে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে ছিলেন আপনার বাবা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন আপনার বাবা। এমনকি পাকিস্তানে অস্ত্র রপ্তানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তিনি।'

মাশকুরা লিখেছে, 'আমরা সবাই জানি, এ বছর কানাডা কনফেডারেশনের ১৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। আমাদের আশা, বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে আপনি ২০১৭ সালকে চিরস্মরণীয় করে রাখবেন।'

উল্লেখ্য, কানাডায় ‘রিফিউজি স্ট্যাটাস’ আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত, এমনকি ডিপোর্টেশন আদেশ মোকাবেলা করার পরেও কানাডা থেকে নুর চৌধুরীকে আইনি কারণে বহিষ্কার করা যাচ্ছে না। অন্য কোনো দেশে ফেরত গেলে ফাঁসির সাজা ভোগ করতে পারেন, এমন কোনো ব্যক্তি কানাডা ভ্রমণে আসলে, নিজে উদ্যোগী হয়ে না ফেরত গেলে, তাকে সরকার জোর করে ফেরত পাঠাতে পারবে না মর্মে ২০০১ সালে কানাডার সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তারই সুফল ভোগ করছেন বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরী। কানাডার অভিবাসন এবং উদ্বাস্তু মন্ত্রণালয় চারবার নুর চৌধুরীর দরখাস্ত নামঞ্জুর করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত