নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ১৪:২৯

শ্রমিকের ঘামে প্রতিরোধের গানে-নগরনাট

১লা মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের এই দিনে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনের নেমেছিল হাজারো শ্রমিক। আর সেদিনই পুলিশের নির্মম গুলিতে নিহত হোন ১০-১২ জন শ্রমিক। আর শ্রমিক মুক্তি সংগ্রামের এই দিনটিকে সামনে রেখে সিলেটের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন ‘নগরনাট আয়োজন করেছে ‘শ্রমিকের ঘামে প্রতিরোধের গান’।


নগরীর রিকাবীবাজারের কবি নজরুল মিলনায়তনের মুক্তমঞ্চে ‘নগরনাট’র এ আয়োজনে থাকছে গণসঙ্গীত ও নাটক। ১ মে মহান মে দিবসে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে শুরু হবে এ আয়োজন।  

আয়োজক সংগঠন নগরনাট সভাপতি অরূপ বাউল সিলেটটুডে ২৪ কে জানান- সভ্যতার শুরু থেকেই সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর এই শ্রমিকদের হত্যা এবং নানারকমের নির্যাতন ও বঞ্চনা করে আসছে মালিক শ্রেণী। অত্যাচারে জর্জরিত হচ্ছে শ্রমিক, শ্রমিকের পরিবার। 

সভ্যতা নির্মাণের কারিগর শ্রমিকরা আমাদের দেশেই আগুনে পুড়ে, ভবন ধ্বসে, গার্ডার ধ্বসে মৃত্যুই শুধু নয়, শ্রম শোষণের শিকারে দুর্বিষহ জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে শ্রমিকরা যখন আন্দোলনে নামে তখন শ্রমিকদের গুলি করে, গুম করে হত্যা করা হয়। পুলিশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।


কিছু দিন আগে স্পেকট্রাম, কেডিএস, গরীব এন্ড গরীব, হা–মীম এবং রানা প্লাজার রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড বিভিন্ন কারখানায় দূর্ঘটনায় শত শত শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আর, প্রতিবারই এ ধরণের ঘটনার পর সরকার ও মালিকের পক্ষ থেকে লোক দেখানো তদন্ত কমিটি, ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কোন তদন্ত রিপোর্ট যেমন জনগণের সামনে আসেনি তেমনি কারখানার অব্যবস্থাপনার জন্য কোন মালিকের শাস্তি হয়নি। বড় বড় মালিকদের রক্ষা করে সরকার ও রাষ্ট্র বারংবার শ্রমজীবী জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগের মহাজোট এবং বিএনপি-জামাত জোট যারাই যখন ক্ষমতাই ছিল তাদের ভূমিকা ছিল একই। বরং শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করার কাজেই ছিল তাদের অধিকতর মনোযোগ। এ জন্য র‌্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা মোতায়েন করা এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করাই শ্রমিক বিষয়ে এসব সরকারের একমাত্র কাজে পরিণত হয়। অথচ এখন সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল মালিক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী এসব দলগুলো শ্রমিকদের জন্য মায়াকান্না করছে।

তাই নগরনাট এ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দাবি জানাচ্ছে, নির্মমভাবে শ্রমিক হত্যা বন্ধ করতে হবে। সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগরদের দালান চাপা দিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে হত্যা বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের নায্য মজুরি দিতে হবে।

‘নগরনাট’র নিজস্ব পরিবেশনা ছাড়াও ঐ দিন থাকছে ছন্দ নৃত্যালয়, নাট্যমঞ্চ, গীতবিতান বাংলাদেশ, তারুণ্য, মৃত্তিকায় মহাকাল ও সংগীত পরিষদের পরিবেশনা। 

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শ্রমিকের ঘামে প্রতিরোধের গানে- নগরনাট নামক ইভেন্ট করে সবাইকে উক্ত অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ যানাচ্ছেন নগরনাটের সংস্কৃতিকর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত