সিকৃবি প্রতিনিধি

২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৬:৪১

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

অষ্টম বেতন কাঠামোতে পূর্বঘোষিত দাবি-দাওয়া না মানায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এর রবিবার সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে বিকাল তিনটায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূর হোসেন মিয়া বলেন, “একদিকে সরকার শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি মানছে না, অন্যদিকে তাদেরকে আরও কয়েকধাপ নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। আমরা তো বেতন বাড়ানো বা টাকা-পয়সার কথা বলছি না, আমরা বলছি আমাদের প্রাপ্য মর্যাদাটুকু আমাদের দিন।”

পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতির সভপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূর হোসেন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ডু স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে বলা হয়;

"সম্প্রতি আবার মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার নিকট ঘোষিত ৮ম বেতন স্কেল নিয়ে আন্দোলন করাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পূর্ণ অজ্ঞতাবশতঃ বলে মন্তব্য করেছেন। অতীতের ন্যায় এবারও আমরা সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে তাঁর এ বক্তব্য সঠিক নয় বলে মনে করি এবং আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। 

৮ম বেতন স্কেল ঘোষণার পূর্বেই পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ সংবাদ মাধ্যমে আসার পর থেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে।

অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড উঠিয়ে দিয়ে যেভাবে অবনমিত করা হয়েছে তা একদিকে যেমন লজ্জাজনক অন্যদিকে তেমনি হতাশাব্যাঞ্জক। তা সত্বেও শিক্ষার্থীদের মঙ্গল চিন্তা করে শিক্ষক সমাজ শিক্ষা কার্যক্রম, পরীক্ষাসমূহ ও নবীন ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি জিম্মি করে কোন কঠিন কর্মসূচি প্রদান করেননি। কিন্তু এখন আমাদের সামনে কঠিন কর্মসূচি প্রদান ছাড়া কোন বিকল্প নাই।

শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন আমাদের দাবি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করলে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি ৮ম বেতন স্কেলে যে বৈষম্য হয়েছে তা পূরণের আশ্বাস দেন এবং এর সুষ্ঠু সমাধান হবে বলে বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস প্রদান করেন যা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সরকারী যে গেজেট প্রকাশ হয়েছে তাতে তার কোন প্রতিফলন আমরা লক্ষ্য করছি না।

আমরা বারবার বলে আসছি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই আন্দোলন সরকার বিরোধী কোন আন্দোলন নয়। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল এর পিছনে কাজ করছে বলে আমরা মনে করি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অবিলম্বে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা এবং এই দাবী বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত সাময়িকভাবে ৭ম বেতন স্কেলের ন্যায় ৮ম বেতন স্কেলেও টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড অব্যাহত রাখার জোর দাবী জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, সপ্তম বেতন কাঠামোয় সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর জেনারেলদের এক নম্বর গ্রেডে রাখা হলেও নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও অধ্যাপকদের বেতন তিন থেকে চার ধাপ নিচে নেমে গেছে।

নতুন কাঠামোতে এই ‘অবনমনের’ প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে গত ১৪ মে থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত