সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৩:২৯

অসুস্থতা নিয়েই শেষ শুটিং করেছিলেন আবদুল কাদের

বরেণ্য অভিনেতা আবদুল কাদের ক্যান্সার ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজ অঙ্গনে। শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন আবদুল কাদের। নাটকের বাইরে আবদুল কাদের জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন হানিফ সংকেতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে অভিনয় করে। দীর্ঘ তিন দশক এই জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের মামা-ভাগ্নে পর্বে অভিনয় করেছেন তিনি। সবশেষ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আবদুল কাদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ‘ইত্যাদি’র শুটিংয়ে।

আবদুল কাদেরের মৃত্য মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে ‘ইত্যাদি’র উপস্থাপক, পরিচালক ও প্রযোজক হানিফ সংকেতের। শনিবার সকালে গণমাধ্যমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হানিফ সংকেত বলেন, "আমাদের জন্য খুবই কষ্টের খবর। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অক্টোবরের মাঝামাঝি সর্বশেষ তিনি ‘ইত্যাদি’র শুট করেছিলেন। সে সময় তাকে খুব অসুস্থ দেখেছি। আমি তাকে বললাম, কী হয়েছে? উনি বললেন, ‘না, কিছু না; কিছু হয়নি।’ শেষে আমাকে বললেন, ‘আমার শরীরটা ভালো না, দোয়া করবেন।’ আমরা তার শট একটা-একটা করে বসিয়ে নিয়েছি। যারা পর্বটা দেখেছেন, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।"

হানিফ সংকেত আরও বলেন, “কাদের ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের প্রায় তিন দশকের সম্পর্ক। উনি অত্যন্ত শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। দীর্ঘ তিন দশক তিনি আমাদের মামা-ভাগ্নে পর্বটা করেছেন এবং তিনি খুব জনপ্রিয়। ভাবি কিছুদিন আগে আমাকে বলেছিলেন... আমরা তাকে মানা করেছি, অসুস্থতা ও করোনার মধ্যে ‘ইত্যাদি’ না করতে। কিন্তু উনি বলেছেন, ‘না আমি ইত্যাদি করবই।’ তিনি শিডিউলমতো আসতেন, সময় নষ্ট করতেন না।"

হানিফ সংকেত বলেন, “তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি যখন চেন্নাই গেলেন। দেশে ফিরেও বিমানবন্দরে নেমে কথা হয়েছে ভিডিও-কলে। অনেক কান্না করলেন। আমাকে বললেন, ‘হানিফ ভাই, জানি না আপনার সঙ্গে আর দেখা হবে কি না। দোয়া করবেন যেন দেখা হয়।’

আবদুল কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন অনেকদিন ধরে। ক্যান্সার জটিল আকারে ছাড়িয়ে পড়েছিল সারা শরীরে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে গেল ৮ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে তার রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় কেমোথেরাপি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন ভারতের চিকিৎসকরা। পরে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীরএভার কেয়ার হাসপালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চলছিল তার চিকিৎসা। অবশেষে সব চিকিৎসার ঊর্ধ্বে চলে গেলেন তিনি। নিভে গেল দারুণ উচ্ছ্বাসে ভরা এক প্রাণ। এরই মধ্যে করনাভাইরাস শনাক্ত হয় তার।

আবদুল কাদের হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় ছাড়াও ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রেও দারুণ প্রশংসিত হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত