
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৩:৫৪
বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা প্রবীর মিত্র গতকাল রোববার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই অভিনেতার ধর্ম পরিচয় নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে অভিনেতা মিশা সওদাগর জানালেন, প্রবীর মিত্রের লাশ দাহ নয়, জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
মিশা সওদাগরজানান, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন প্রবীর মিত্র। তাই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে।
ইতোমধ্যে অভিনেতার পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। প্রবীর মিত্রর ছেলে মিঠুন মিত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রোববার রাতেই গোসল শেষে ফ্রিজার গাড়িতে মরদেহ ধানমন্ডির বাসায় নেওয়া হয়েছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) যোহরের পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) তার প্রথম জানাজা হবে। পরে সেখান থেকে মরদেহ চ্যানেল আইয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গোপেন্দ্র নাথ মিত্র এবং মা অমিয়বালা মিত্র। বংশপরম্পরায় পুরান ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা প্রবীর মিত্র। তিনি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেন। তিনি প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন হিসেবে খেলেছেন। একই সময় তিনি ফায়ার সার্ভিসের হয়ে ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন। এছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমার অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন প্রবীর মিত্র।
এর মধ্যে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ উল্লেখযোগ্য।
প্রবীর মিত্র তার প্রেমিকা অজন্তাকে বিয়ে করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বিয়ে করার সময় তিনি হিন্দুধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। অজন্তা ২০০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
এই দম্পতির তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তারা হলেন - মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। ছোট ছেলে সামিউল ২০১২ সালে ৭ মে মারা যান।
আপনার মন্তব্য