বিনোদন ডেস্ক

১৫ জুলাই, ২০১৬ ২২:৪৯

বাঁচতে চান শিল্পী লাকী আখন্দ, সাহায্যের আবেদন

কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখন্দ বাঁচতে চান। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা এ শিল্পী আগে অনেকবার কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানালেও, এবার অনন্যোপায় হয় এ সহায়তা চেয়েছেন।

ফুসফুসের ক্যানসার আক্রান্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখন্দের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংকক থেকে ফেরার পর পুনরায় অসুস্থতা দেখা দিলে তাকে রাজধানীর শাহবাগের ইব্রাহিম মেমোরিয়াল কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ খবর অনুযায়ী, যে কোন সময় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে ।

গুণী এ শিল্পীর চিকিৎসার্থে আর্থিক সংকট চরমে উঠেছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসার প্রাথমিক পর্যায়ে আর্থিক সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানালেও বর্তমান পরিস্থিতিতে লাকী আখন্দ নিজেই তার ভক্ত ও সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা দাবি করেছেন।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙার কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ দাবি জানান লাকী আখন্দ। তিনি বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা পেলে ভালো হয়। আমি আমার ভক্ত ও সরকারের কাছে চিকিৎসা সহায়তা চাইছি।’

এ প্রসঙ্গে কিছুটা বিব্রত শিল্পীর কন্যা মাম্মিন্তি বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। দু’ একটা মিডিয়ায় এই ধরনের সংবাদ প্রচার হয়েছে। খুব বেশি প্রচার চাইছি না। আপাতত আমরা বাবাকে নিয়েই ব্যস্ত আছি। গত দু’দিন ধরে উনার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। বাবাকে এখান থেকে আজকেই ইউনাইটেডে স্থানান্তর করবো।’

জানা যায়, কয়েকদিন আগে গুণী এই শিল্পীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেমোথেরাপির ফলে মেরুদণ্ডের ব্যথায় ভুগছিলেন তিনি। ছ’মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন লাকী। এরপর বাসায়ই সময় কাটছিলো তার। কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতিও হয়েছিলো।

এ বছরের জুনে লাকী আখন্দের ফের ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিলো। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যানসারে আক্রান্ত লাকীকে সেখানকার হাসপাতালে গিয়ে আরও পাঁচটি কেমো নেওয়ার কথা ছিলো। বিশেষ সূত্রে জানা যায় মূলত আর্থিক সংকটেই চিকিৎসা থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন জীবন্ত এ কিংবদন্তী।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়ায় লাকী আখন্দকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সপ্তাহখানেক পর তার ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। তখনই ব্যাংককের পায়থাই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। প্রথম দফায় শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এরপর অক্টোবরের প্রথম দিকে ঢাকায় নিজ বাসায় ফেরেন লাকী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নভেম্বরে তাকে ফের ব্যাংককে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসে সরকার।

লাকী আখন্দ একাধারে সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকারও। ১৯৮৪ সালে বাজারে আসা তার প্রথম একক অ্যালবামের ‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘রীতিনীতি জানি না’, ‘সুমনা’র মতো গান শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

১৯৮৭ সালে ছোট ভাই ‘হ্যাপী আখন্দের’ মৃত্যুর পর সঙ্গীতাঙ্গন থেকে নিজেকে অনেকটাই দূরে সরিয়ে নেন এই গুণী শিল্পী।

প্রায় এক দশক নীরব থেকে ১৯৯৮-এ ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটি নিয়ে লাকী আবারও ফিরে আসেন শ্রোতাদের মাঝে।

লাকী আখন্দ অসংখ্য কালজয়ী গান সুর করেছেন, গেয়েছেনও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘আমায় ডেকো না, ‘এই নীল মণিহার, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার, ‘মামনিয়া', ‘লিখতে পারি না কোনো গান', ‘ভালোবেসে চলে যেও না’, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’, ‘এতো দূরে যে চলে গেছো’ প্রভৃতি।

লাকী আখন্দের পাশে দাঁড়াতে হলে:
লাকী আখন্দ
ব্যাংকক ব্যাংক, থাইল্যান্ড
একাউন্ট নাম্বার: ১১৩.৪.৯১৮৬৮

উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড
একাউন্ট নাম্বার: এস বি ১৪৭৬

ডাচ বাংলা ব্যাংক
একাউন্ট নাম্বার: ১৬২.১০১.১৩৭৩৫৯

আপনার মন্তব্য

আলোচিত