বিনোদন ডেস্ক

৩১ আগস্ট, ২০১৬ ১৮:২৭

আমি চাচ্ছি ছবিটি বাজেয়াপ্ত করা হোক : শাওন

হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে ‘ইএসপি-একটি রহস্য গল্প’ ছবি নির্মিত হলেও এর কোথাও লেখকের নাম উল্লেখ না করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মেহের আফরোজ শাওন।

ঘটনার শুরুটা ২১ আগস্ট। সেদিন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখর দাসের নতুন ছবি ‘ইএসপি-একটি রহস্য গল্প’র উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছিল। এর পরই হুমায়ূনভক্ত এবং তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন অভিযোগ করেন, ছবিটি হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে নির্মাণ করা হলেও এর কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টির সুরাহায় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন মেহের আফরোজ শাওন। এদিকে কলকাতা বইমেলায় অংশ নিতে বুধবার কলকাতায় যাচ্ছেন শাওন। সেখানেও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন শাওন।

ঘটনাটি যেভাবে জানতে পারলেন—

২১ আগস্ট শেখর দাস পরিচালিত এ ছবির প্রিমিয়ার হয়। এর পর আমার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করে। তখন ভেবেছিলাম, ওরা বোধহয় ভুল ভাবছে। একজনের একটা উপন্যাস আরেকজন চুরি করে বানিয়ে ফেলবে, সেটি তো ভাবতেই পারিনি! যাহোক, তার পর ২৩ তারিখই আমি ছবিটি পুরো দেখি। তখনই  আবিষ্কার করি, ছোটখাটো দুয়েকটি জায়গা ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের দেবীর সঙ্গে ছবিটির হুবহু মিল।

কাকতালীয়ভাবেও তো গল্পের সঙ্গে সিনেমার গল্প মিলে যেতে পারে, কীভাবে পুরোপুরি নিশ্চিত হলেন?

যারা হুমায়ূন আহমেদের লেখার মুগ্ধ পাঠক, যারা তার দেবী উপন্যাস অসংখ্যবার পড়েছেন, তারাই প্রথম আমাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এর পর দেখলাম, নীলু চরিত্রটি ‘দেবী’তে বাড়িওয়ালার মেয়ে হলেও ছবিতে ভাড়াটিয়ার মেয়ে। আর মিসির আলীকে একজন অধ্যাপকের চরিত্রে দেখানো হয়েছে। এছাড়া উপন্যাসে বর্ণিত সংলাপও হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। না জেনে বা কাকতালীয়ভাবে মিললে সর্বোচ্চ ২০-২৫ ভাগ মিলতে পারে। তাই বলে ৯৫ ভাগ মিল! এটা কখনই কাকতালীয় হতে পারে না। আমি নিশ্চিত, ঘটনাটি চৌর্যবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই না। সবচেয়ে খারাপ লেগেছে, শেখর দাসের মতো পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন নির্মাতা এ রকম কাজ করলেন কীভাবে!

বিষয়টির সমাধান যেভাবে প্রত্যাশা করেন—

প্রাথমিকভাবে আমি প্রতিবাদ জানিয়েছি। এছাড়া কী করা যায়, কীভাবে আমার অভিযোগটি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায়, সে চেষ্টাও করছি। বাংলাদেশ প্রডিউসার অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের যারা কর্তাব্যক্তি আছেন, তাদের অনেকের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে। তারা বলেছেন, সম্ভবত ‘এমপা’ নামে কলকাতায় একটা শক্তিশালী অ্যাসোসিয়েশন আছে। এখন তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সুরাহা চাইব। পাশাপাশি উকিল নোটিস পাঠানোরও ব্যবস্থা করছি।

এখন যদি ইএসপি- একটি রহস্য গল্প ছবির নির্মাতা ছবিতে হুমায়ূন আহমেদের নাম যুক্ত করেন, তাহলে কী করবেন?

নাম দিলেই যে খুশি হয়ে যাব, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, ব্যাপারটা তা নয়। শুরুতেই ওনার কথা বলে নেয়া উচিত ছিল। এটা খুবই হাস্যকর ব্যাপার। এখন নাম দিলে তো গরু মেরে জুতা দান করা হবে, তাই না! আমি চাচ্ছি ছবিটি বাজেয়াপ্ত করা হোক। এবং এই অপরাধের জন্য জন্য শেখর দাসকে ক্ষমা চাইতে হবে।

নাম ছাড়াও কি আর কোনো অভিযোগ আছে আপনার?

হ্যাঁ আছে। দেবীর পাঠকেরা যদি ছবিটি দেখেন, তাহলে তারাও বলবেন ইএসপি-একটি রহস্য গল্প ছবিটি মূল গল্প দেবীর ধারেকাছেই যেতে পারেনি। দেবীর সঙ্গে সুবিচার করা হয়নি এতে। যাহোক, এটি যদি অসম্ভব ভালো ছবিও হতো, তাহলেও আমি প্রতিবাদ করতাম।
সূত্র : বণিক বার্তা






আপনার মন্তব্য

আলোচিত