সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ জুলাই, ২০২৩ ০২:৫২

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১০৩তম প্রতিষ্ঠাদিবস আজ।

সে সময় ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত ভবনাদি এবং ঢাকা কলেজের (বর্তমান কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তৎকালীন ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ির নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টায় ১৯১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ দেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। অতঃপর ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভায় 'দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯২০' পাস হয়।

১৯২১ সালের ১ জুলাই দেশের প্রাচীনতম এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার এই দিনটি প্রতিবছর ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক আন্দোলনের সূচনা ও বেগবান করেছে এবং দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চিন্তা ও সক্রিয়তার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং এর পরবর্তী সব জনআন্দোলন ও সংগ্রামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। এখনও সারাদেশের সুস্থ চিন্তার বিকাশ; অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কেন্দ্র হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

শুরুতে কলা, বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের অন্তর্ভূক্ত বিভাগগুলো ছিল সংস্কৃত ও বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ, ফারসি ও উর্দু, দর্শন, অর্থনীতি ও রাজনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং আইন। প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০ জন।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১২টি ইনস্টিটিউট, ৮৩টি বিভাগ, ৫৬টি গবেষণা কেন্দ্র, ১২৩টি অ্যাফিলিয়েটেড কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন প্রায় ৩৯ হাজার।

পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় দুই হাজার শিক্ষক।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীসহ অনেকে শহিদ হয়েছেন।

 

কর্মসূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শনিবার সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পায়রা চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হবেন। স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনের পায়রা চত্বরে যাবেন।

সকাল ১০টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা, বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিম সং ও উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশিত হবে।

সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়’ নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ আলোচনা সভায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নীলক্ষেত ও ফুলার রোড থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ থাকবে। এ সময় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত