নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪ ১৩:১০

আজ সুন্দরবনকেও ভালোবাসার দিন

প্রতীকী ছবি

‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ এ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে প্রতিবারের ন্যায় এবারো আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সুন্দরবন দিবস উদযাপন হচ্ছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে রক্ষায় খুলনাসহ উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দুই দশক ধরে দিনটি উদযাপন হয়ে আসছে।

২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশ-এর উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করে প্রতিবছর পালন করা হয়।

ওই সম্মেলনে গৃহীত ১৮ দফার মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন ও বনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে, জাতীর প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষার জন্য বাঘ-হরিণসহ সুন্দরবনের সব ধরনের জীবজন্তু হত্যা বন্ধসহ যাবতীয় বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে, সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পে যে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় জনগণের মতামত নিতে হবে এবং তেল-গ্যাস আবিষ্কারের জন্য অনুসন্ধানী উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে।

বন বিভাগ সূত্র বলছে, বাংলাদেশ অংশের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনে এখন বাঘশুমারি চলছে, যা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এবার শুমারিতে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ২০২৩ সালের শুমারি অনুযায়ী, বনে চিত্রা হরিণ, বন্য শূকর ও বানরের সংখ্যা বেড়েছে। বনে ২০০৪ সালে চিত্রা হরিণ ছিল ৮৩ হাজার, ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টিতে। বন্য শূকর ২০০৪ সালে ছিল ২৮ হাজার, ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৫১৫টিতে। ২০০৪ সালে বানর ছিল ৫১ হাজার, ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪টিতে। এ ছাড়া বর্তমানে বনে গুইসাপ রয়েছে ২৫ হাজার ১২৪টি ও শজারু ১২ হাজার ২৪১টি। ২০২৩ সালের আগে কখনো এ দুটি প্রাণির শুমারি হয়নি। তবে আশির দশকে মায়া হরিণ ছিল ২ হাজার ২৬৫টি, ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৮৭টিতে। ১৯৯৫ সালে বনের নদীতে কুমির ছিল ১৫০ থেকে ২০০টি, ২০১৬ সালের জরিপে কুমিরের সংখ্যা দেখানো হয় ১৫০ থেকে ২০৫টি। তবে কমেছে দুই প্রজাতির ডলফিন। ২০০৬ সালে বনের নদীতে ছিল ৪৫১টি ইরাবতী ডলফিন ও ২২৫টি শুশুক। ২০১৯ সালে কমে দাঁড়ায় ইরাবতী ডলফিন ১১৩টি ও শুশুক ১১৮টি।

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাসানুর রহমান বলেন, সুন্দরবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সমগ্র দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থাও সুন্দরবনের ওপর কম-বেশি নির্ভরশীল। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের প্রাকৃতিক এই সুরক্ষাদেয়ালকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত