সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:৩১

বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস আজ

আজ ১৫ অক্টোবর, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে। যার মূল উদ্দেশ্য- রোগ প্রতিরোধে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো।

২০০৮ সালে সুইডেনের স্টকহোমে বিশ্ব পানি সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং পার্টনারশিপে সর্বপ্রথম হাত ধোয়া সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর দিনটি পালনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়।

এর উদ্যোগী সংস্থাগুলো হল- FHI 360 (আমেরিকাভিত্তিক একটি অলাভজনক মানব উন্নয়ন সংস্থা) ইউনিসেফ, ইউনিলিভার, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বেল, বিশ্বব্যাংকের পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রোগ্রাম এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট)।

প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের ২০ কোটিরও বেশি মানুষ গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং ডে পালন করে।

ইউনিসেফের হিসাবে, বিশ্বে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় মারা যায় সবচেয়ে বেশি শিশু। নিয়মিত হাত ধোয়ার মাধ্যমে তাদের বড় একটি অংশকে এসব রোগ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

চিকিৎসকরা বলেন, হাত ধোয়ার মতো সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে শিশুদের আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস, ডায়রিয়া, কৃমির মতো রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যায়। হাতের লোমকূপের গোড়ায় এক বর্গ-মিলিমিটার জায়গায় ৫০ হাজার জীবাণু থাকতে পারে। যা খালি চোখে দেখা যায় না। সারাদিনের নানা কাজে নানা বস্তু স্পর্শ করার মাধ্যমে এসব জীবাণু হাতে আসে। এই হাতে অন্যজনকে স্পর্শ করলে, তার কাছেও জীবাণু ছড়ায়।

তাই ময়লা-আবর্জনা স্পর্শ করার পর, হাত দিয়ে নাক ঝাড়লে অবশ্যই সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে হাত ধুতে হবে। শৌচকর্মের পরে ও খাওয়ার আগে জীবাণুমুক্ত করতে হাত ধুতে হবে।

কীভাবে জীবাণু আমাদের হাতে আসে এবং মানুষকে অসুস্থ করে
টয়লেট ব্যবহারের পর ভালভাবে হাত না ধোয়ার কারণেই সাধারণত জীবাণু সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। মানুষ এবং অন্যান্য পশুর বিষ্ঠায় সালমোনেলা, ই-কোলাই এবং নোরোভাইরাসের মতো জীবাণু থাকে যা ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ। শুধু তাই নয় এগুলো শ্বাসনালীর সংক্রমণ যেমন এডিনোভাইরাস এবং হ্যান্ড-ফুট-মাউথ রোগেরও কারণ। এই ধরনের জীবাণু মানুষের হাতে আসে টয়লেট থেকে বা বাচ্চার ডায়াপার বদলানোর পর হাত ভালভাবে না ধোয়া থেকে, এমনকি এই জীবাণু কাঁচা মাংস নিয়ে কাজ করলেও হাতে আসতে পারে।

এছাড়াও কফ, হাঁচি, কাশি থেকে জীবাণুর সংক্রমণ হয়। দুষিত কোনো কিছুর সংস্পর্শে আসলেও মানুষের হাতে জীবাণু আসতে পারে। আর হাতে লেগে থাকা এই জীবাণু যদি ধুয়ে না ফেলা হয় তাহলে শুধু যিনি বাহক তিনিই নন, তার সংস্পর্শে যারাই আসবেন সবাই-ই সংক্রমিত হতে পারেন।

কখন হাত ধোয়া উচিত

খাবার তৈরি করার আগে, মাঝখানে এবং পরে।
খাওয়ার আগে
অসুস্থ কারো সেবা করার আগে এবং পরে
দেহের কাঁটা ছেড়া বা ক্ষতর চিকিৎসা করার আগে ও পরে
পায়াখানা প্রস্রাবের পরে
বাচ্চার ডায়াপার বদলানো বা বাবুর পায়খানা পরিষ্কারের পরে
নাক ঝাড়া, কফ ফেলা বা হাঁচি দেবার পরে
কোনো পশুপাখি বা পশুপাখির খাবার বা পশুর বিষ্ঠা ধরার পরে
পোষা জীব জন্তুর খাবার ধরার পরে
আবর্জনা ধরার পরে

কীভাবে হাত ধোয়া উচিত

পরিষ্কার পানিতে হাত ভেজান, হাতে সাবান দিন
হাতে হাত ঘষে ফেনা তৈরি করুন, আঙুলের ফাকে, নখের মধ্যে পরিষ্কার করুন
অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ডলে পরিষ্কার করুন।
পরিষ্কার চলমান পানিতে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হাত মুছুন অথবা বাতাসে শুকিয়ে নিন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত