সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ অক্টোবর, ২০১৫ ২০:৩০

সিরিয়ার পর রাশিয়ার লক্ষ্য ইরাক!

রাশিয়ার অভিযানে সিরিয়ায় পিছু গঠতে শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বিশ্লেষকদের ধারণা, সিরিয়াকে আইসমুক্ত করতে সফল হলে রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে ইরাক।

বিগত কয়েক বছরে কমপক্ষে ৯ হাজার বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুদ্ধ বিমান। তবুও সিরিয়া থেকে আইএসের মুলোৎপাটন সম্ভব হয়নি। বরং আরো শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে নিজেদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে ইসলামিক স্টেট। তবে আন্তর্জাতিক রণবিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়া থেকে আইএসের শেকড় তুলে ফেলার কাজে ব্যর্থ হবে না রাশিয়া।

তাদের এমন আশাবাদের কারণ, গত কয়েকদিনে আইএসবিরোধী অভিযানে রাশিয়া-সিরিয়া-ইরান-ইরাক জোটের ধারাবাহিক সাফল্য।

রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগে যখনই যারা আইএসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের কেউই সিরিয়ান সরকারের সঙ্গে এক হয়নি। কিন্তু এবার সিরিয়ান আর্মি আর রাশিয়া একসাথে কাজ করছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সিরিয়ায় আইএসবিরোধী বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় আইএস দমনে রাশিয়ার অবস্থান। এর ফলে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া।

তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট দাবি করছে, রাশিয়া আইএসের বদলে আসাদ বিদ্রোহীদের উপরই হামলা চালাচ্ছে বেশি। রাশিয়ার এমন হামলার ক্রমাগত বিরোধিতা করে চলেছে তুরস্কসহ ন্যাটো। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানামুখি চাপও তৈরি করা হচ্ছে। তবে এতোকিছুর পরও রাশিয়া তাদের অব্যাহত হামলায় সফল হবে বলেই রণবিশ্লেষকদের ধারণা।

রাশিয়া বিমান হামলা শুরু করার পর থেকেই পেছন সরতে শুরু করছে আইএস। এর ফলে একে একে মুক্ত হতে শুরু করেছে আইএসের দখলে থাকা নানান এলাকা।

সাফল্যেরে পথে ৬ অক্টোবরে রাশিয়া পালমিরার কাছে ২০টি আইএস ট্যাঙ্ক বিধ্বস্ত করতে সক্ষম। এর আগের দিন হোমসে আইএসের যোগাযোগকেন্দ্র ধ্বংস করে দিতে সফল হয় রাশিয়া। ফলে একদিকে যেমন আইএসের যোগাযোগ সুবিধা অনেকখানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনই সমস্ত ডাটাও ধ্বংস হয়ে গেছে নিমেষে।

রাশিয়ার রণতরী থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাতেও ধ্বংস হচ্ছে একের পর এক আইএস ঘাঁটি। স্থলপথে অভিযান পরিচালনা করছে সিরিয়ান আর্মি। অনেক জায়গা থেকেই জঙ্গীরা তাই পালিয়ে যেতে শুরু করেছে।

এর আগে ওয়াশিংটনের চালানো প্রায় বছরব্যাপি সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের পরও ওইসব এলাকায় আইএস নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিলো। তবে এখন পুতিনের সহযোগিতায় আইএসকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করতে শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ।

আর এখানেই যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া যে শুধু আইএসের বিরুদ্ধেই অভিযান পরিচালনা করছে এমন নয়। আসাদবিরোধী অন্যান্য বিদ্রোহী গ্রুপও তাদের টার্গেট। আবার আসাদকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বিরোধীদের সহায়তার পাশাপাশি আইএসের উত্থানেও ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হয়।

বর্তমান অবস্থায় শুধু দামেস্ক বা মস্কো বা তেহরান নয়, রণবিশ্লেষকরাও মনে করছেন, আইএসের অন্তত: সাময়িক পরাজয় এখন সময়ের ব্যাপার। তাদের প্রত্যাশা, খুব শিগগিরই আইএসের দখল মুক্ত সিরিয়া ফিরবে পৃথিবীর মানচিত্রে।

শুধু সিরিয়া নয়, শিগগিরই ইরাকেও রাশান বাহিনী অভিযানে নামতে পারে।

সিরিয়ায় আইএস দমনে রাশিয়ার কার্যক্রমে মুগ্ধ ইরাকও আইএস দমনে রাশিয়ার কাছ থেকে একইরকম সহযোগিতার চাইতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত