সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ অক্টোবর, ২০১৫ ১৫:৪৩

যুক্তরাষ্ট্রের পিছুটান, সিরীয় বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ বন্ধের ঘোষণা

সিরিয়ায় আসাদবিরোধীদের প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিদ্রোহীরা জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে এমন খবর প্রকাশের পরেই সিরিয়ায় মার্কিন নীতিতে এই পরিবর্তন এলো। এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের পিছুটান হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে, সিরিয়ায় রাশিয়ার ছোঁড়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটি ভুল জায়গায় আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ নেওয়া বিদ্রোহীদের সাজোয়া যান ও গোলাবারুদ জঙ্গিদের কাছে হস্তান্তরের তথ্য প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ কোটি ডলারের ওই কর্মসূচি।

ওই যোদ্ধাদের মাত্র চার থেকে পাঁচজন সিরীয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মসূচির আওতায় চলতি বছর ৫ হাজার ৪০০ এবং আগামী বছর আরও ১৫ হাজার যোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সরবরাহের লক্ষ্য ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন বি. কার্টার শুক্রবার যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে লন্ডন ত্যাগ করার পর পেন্টাগনের কর্মকর্তারা এই কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সিরিয়ার দিকে মনোযোগ ঘোরায় যুক্তরাষ্ট্র এই কর্মসূচি বন্ধ করেছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ওই এলাকায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইরত সিরিয়ান কুর্দি বাহিনীর পাশাপাশি ‘সিরিয়ান আরব কোয়ালিশনে’ সুন্নি উপজাতি গ্রুপগুলোকে সংগঠিত করার আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে পেন্টাগন এক বিবৃতিতে বলেছে, “প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার এখন প্রতিরক্ষা বিভাগকে একদল পরীক্ষিত নেতা ও তাদের ইউনিটগুলোকে অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহের নির্দেশ দিচ্ছেন, যাতে এখনও আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোতে সম্মিলিতভাবে তারা ঢুকতে পারেন।”

তবে এবারের এই কর্মসূচি আগেরটার চেয়ে ‘অনেক স্বল্প পরিসরে’ হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে রাশিয়া ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে এ পরিবর্তন এসেছে।

২০১১ সালে সিরিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থেকে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হলে বিদ্রোহী বিভিন্ন পক্ষকে পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সামরিক সরঞ্জাম দেয় তারা। জর্ডান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

সিরিয়ায় আসাদ সরকারবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের এক পর্যায়ে উত্থান ঘটে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের; সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় তারা।

উগ্রপন্থি এই গোষ্ঠীর মানবতাবিরোধী নানা অপরাধের খবর আসার এক পর্যায়ে তাদের দমনে বিমান হামলা চালানো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা।

তবে বছরখানেকের ওই অভিযানের পরেও আইএসের তৎপরতার মধ্যে গেল সপ্তাহে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে রাশিয়া। পাশাপাশি কাস্পিয়ান সাগরে নৌবহর থেকে সিরিয়ায় আইএসসহ সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে মস্কো।

রাশিয়ার হামলায় আইএসসহ অন্যান্য ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ লড়াইয়ের সক্ষমতা কমে গেছে বলে বৃহস্পতিবার সিরিয়ার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত