আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ জুন, ২০২০ ১৮:৩২

ভারতে ফের ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপালের হানা, এবার দিল্লিমুখী

করোনাভাইরাস সঙ্কটে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখা প্রতিটি দেশের জন্যই জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে কৃষকের অন্যতম শত্রু পঙ্গপালের দল নিমিষেই বিপুল ক্ষতি করতে পারে ফসলের। চলমান মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পঙ্গপালের আগ্রাসন।

মাসখানেক আগে পশ্চিম ও মধ্য ভারতে তাদের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল। এবার ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল গিয়ে পৌঁছেছে উত্তর ভারতেও। রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন গুরুগ্রামের আকাশ ছেয়ে গিয়েছে পঙ্গপালে। হরিয়ানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলেও তাদের উপদ্রব বেড়েছে। তাদের হাত থকে বাঁচতে দরজা-জানালা বন্ধ করে এক রকমের গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন স্থানীয় মানুষ। খবর আনন্দবাজারের।

গুরুগ্রামের সাইবার হাব এলাকায় গত শুক্রবার বিকেল থেকেই পঙ্গপালের উপদ্রব শুরু হয়। তার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের দরজা-জানলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। থালা-বাসন বাজিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়। কিন্তু রাত পেরিয়ে গেলেও মরু পতঙ্গের দল এলাকা ছেড়ে যায়নি। বরং এ দিন সকালে গোটা এলাকা পঙ্গপালে ছেয়ে যায়। আতঙ্কে দরজা-জানলা বন্ধ করে বাড়িতেই বসে থাকেন স্থানীয়রা।

এমজি রোড, ইফকো চক, ডিএলএফ ফেজ আই-৪,ভিলেজ চক্করপুর, সিকন্দরপুর, সুখরালির মতো গুরুগ্রামের ব্যস্ত এলাকাতেও এ দিন পঙ্গপাল হানা দেয়। বেভারলি পার্ক-২-র বাসিন্দা রীতা শর্মা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ''সকাল ১১টা নাগাদ ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল উড়ে বেড়াতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে জানলা-দরজা বন্ধ করে দিই। আবাসিক এলাকার সাইরেন বাজিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানোর চেষ্টা করি আমরা।''

বিজ্ঞাপন

সাইবার হাব এলাকায়, যেখানে বড় বড় বিল্ডিং রয়েছে, সেখানেও পঙ্গপালের উপদ্রব দেখা গিয়েছে এ দিন। ঘরের মধ্যে থেকে ছবি ও ভিডিও তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন অনেকেই। সুমিত দাস নামের এক ব্যক্তি টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, মাটি থেকে অনেকটা উঁচুতে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল উড়ে বেড়াচ্ছে। প্রশান্ত কুমার নামের অন্য এক জন যে ভিডিও পোস্ট করেন, তাতেও একটি বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল উড়ে যেতে দেখা যায়।

পঙ্গপালের উপদ্রবে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক শস্যহানির আশঙ্কা রয়েছে। হরিয়ানার ঝাজ্জরে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে পঙ্গপালের দল। তাদের মারতে কৃষকদের দমকল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন, যাতে দমকলের ইঞ্জিন থেকে কীটনাশক স্প্রে করা যায়। পঙ্গপালের বিরুদ্ধে হরিয়ানার সকল গ্রামে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য কৃষি দপ্তর।

অন্যদিকে, প্রতিবেশী রাজ্য থেকে পঙ্গপাল এসে ঢুকতে পারে আশঙ্কা করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে দিল্লিতেও।  গুরুগ্রাম-দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়েতে ইতিমধ্যেই পঙ্গপালের দেখা মিলেছে। তার জন্য সমস্ত বিমান সংস্থাগুলিকে সতর্কতামূলক নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল। পঙ্গপালের গতিবিধি জানতে বিশেষ নজরদারি দলও গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত দিল্লিতে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিকই রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত