আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:১০

ফ্রান্সের গির্জায় হামলাকারী ২১ বছর বয়সী যুবক তিউনিসিয়ার নাগরিক

ফ্রান্সের নিস শহরে গির্জায় ছুরিকাঘাত করে তিন জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত যুবকটির বয়স মাত্র ২১ বছর। তার বাড়ি তিউনিসিয়ায়। তার কাছ থেকে পাওয়া কাগজপত্র বলছে, মাত্র ক’দিন আগেই তিনি ইউরোপে এসেছেন। পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ তরুণটি এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ওই তরুণের কাছে রেস ক্রসের একটি কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, অভিবাসীবাহী একটি নৌকায় চড়ে গত মাসে ইতালির ল্যামপেডুসা দ্বীপে হাজির হন তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তরুণটির নাম ব্রাহিম আওইসাওয়ি।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ফ্রান্সের নিস শহরের নটরডেম গির্জায় ওই তরুণের হামলায় এক নারীসহ তিন জন নিহত হন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর, ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে ওই তরুণ হামলা চালান। এর মধ্যে একজনকে প্রায় শিরশ্ছেদ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ফ্রান্সের প্রধান সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তা জ্যঁ-ফ্রাসোয়া রিকার্ড জানিয়েছেন, হামলাকারীর কাছ থেকে একটি কোরআন, দু’টি টেলিফোন ও একটি ১২ ইঞ্চি ছুরি পাওয়া গেছে। রিকার্ড বলেন, আমরা হামলাকারীর একটি ব্যাগও পেয়েছি। এই ব্যাগেও দুইটি ছুরি ছিল। তবে সেগুলো আক্রমণে ব্যবহৃত হয়নি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই হামলাকে ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, পাবলিক প্লেসগুলোতে নিরাপত্তার জন্য সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করেছেন। ফ্রান্সের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করা হয়েছে।

নিসে ওই হামলার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ম্যাখোঁ বলেন, আমরা আরও একবার হামলার শিকার হলাম, আমাদের স্বাধীনতার মূল্যবোধের কারণে। তবে আমি আবারও স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই— আমরা আত্মসমর্পণ করব না।

এর আগে, ১৬ অক্টোবর প্যারিসের স্কুল শিক্ষক স্যামুয়েল পেটিকে ছুরি হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়৷ তিনি ক্লাসরুমে বাকস্বাধীনতা পড়াতে গিয়ে হযরত মোহাম্মাদের এর কার্টুন দেখিয়েছিলেন বলে তাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়।উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরতলীতে একটি স্কুলের কাছের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। হামলাস্থলের কাছেই পাহারায় থাকা পুলিশ ছুরি হাতে হামলাকারীকে দেখতে পেয়ে তার ওপর গুলি চালায়। সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ফ্রান্সের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই হামলার সময়ও প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলাকারীকে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করতে শুনেছেন। ওই শিক্ষক ক্লাসরুমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে গণমাধ্যমের খবরে।

ফ্রান্সে গত কয়েকবছর ধরে জঙ্গিরা দফায় দফায় সহিংস হামলা চালিয়ে আসছে। গত মাসেই ফ্রান্সের রম্য ম্যাগাজিন শার্লি এবদোর পুরনো কার্যালয়ের কাছে দু’জন ছুরিকাহত হন। বিতর্কিত কার্টুন ছাপার জেরে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্যারিসে শার্লি এবদো কার্যালয়ে ঢুকে গুলি চালিয়ে ১২ জনকে হত্যা করে উগ্রপন্থী মুসলিম দুই ভাই। সেই হামলায় মারা গিয়েছিল ফ্রান্সের বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট-সহ ১২ জন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত