সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ১২:০০

মিয়ানমারে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেনাবিরোধী বিক্ষোভ

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে টানা চতুর্থ দিনের মতো উত্তাল রয়েছে মিয়ানমারের রাজপথ। ইয়াঙ্গুন ও রাজধানী নেপিদোসহ কয়েকটি বড় শহরে ১০ হাজারের বেশি মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।

এদিকে নেপিদোতে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ জলকামান প্রয়োগ করলেও বড় কোনো সহিংসতার খবর মেলেনি। তবে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, বড় ধরনের বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।

নেপিদোর রাজপথে বিক্ষোভে শামিল হন মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংকার, আইনজীবী, চিকিৎসক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। আগে থেকে বিক্ষোভ করছিলেন দেশটির শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের একটি দল।

বিক্ষোভ মিছিলে ১০ হাজারের বেশি মানুষ সমবেত হন। তারা সেনা শাসনবিরোধী স্লোগান দেন ও অং সান সু চিসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করেন। অনেকেই সু চির রাজনৈতিক দল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এলএনডি) লাল রঙের পতাকা ও ব্যানার বহন করেন।

নেপিদোতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর পরও সহিংসতার কোনো খবর মেলেনি। বিক্ষোভ হয়েছে ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয় শহরেও।

সু চির ছবি হাতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাইন হায়মান সোয়ে। তিনি বলেন, মিছিলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পাশাপাশি তরুণদের অংশগ্রহণ নজর কেড়েছে। তারা কোনোভাবেই সেনা শাসন মেনে নিতে পারছেন না। দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ থাকলেও রাজপথের বিক্ষোভে জনসমাগম দিন দিন বাড়ছে।

এদিকে চলমান বিক্ষোভ দমাতে প্রয়োজনে কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মিয়ানমার পুলিশ। সেনানিয়ন্ত্রিত এমআরটিভি স্টেশন মিয়ানমার পুলিশের বরাতে জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টের চেষ্টা করা হলে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও আইনের শাসন অক্ষুণ্ন রাখতে চলমান বিক্ষোভের লাগাম টানতে প্রয়োজনে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্ন উভয় কক্ষেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি। জনগণের এ রায় মেনে নেয়নি দেশটির সেনাবাহিনী তাতমাদো ও বর্মি রাজনীতিতে তাতমাদোর প্রক্সি হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।

১ ফেব্রুয়ারি সকালে সংঘটিত হয় সেনা অভ্যুত্থান। মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে তাতমাদো। আটক করা হয় প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অং সান সু চিকে। এ সময় দেশের ক্ষমতা কমান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভ্যুত্থানের পর গতকাল প্রথমবারের মতো দেয়া এক বক্তব্যে জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, এখনকার সরকারের সঙ্গে আগের জান্তা সরকারের মিল নেই। বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। বিদেশনীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য এখনো মিয়ানমারের দরজা খোলা রয়েছে। তবে বিক্ষোভের নামে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির চেষ্টা হলে তা দমন করার কথা জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত