আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ মার্চ, ২০২১ ১০:৪০

‘মুখ ঢাকা পোশাক’ নিষিদ্ধের পক্ষে সুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ডে জনসমক্ষে বোরকা, নিকাবসহ মুখ ঢাকা সকল পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে সামান্য বেশি ভোট পড়েছে। স্থানীয় সময় রোববার অনুষ্ঠিত এ গণভোটে বোরকা নিষিদ্ধের পক্ষে ছিলেন ৫১ দশমিক ২ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে নিষিদ্ধের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪৮.৮ শতাংশ।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সুইজারল্যান্ডের ২৬টি ক্যান্টনের (প্রশাসনিক অঞ্চল) ছয়টিতে বেশিরভাগ মানুষ বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এই ছয় ক্যান্টনের মধ্যে আছে দেশটির সবচেয়ে বড় তিন শহর জুরিখ, জেনেভা ও বাসেল। এ ছাড়া রাজধানী বার্নের অধিকাংশ মানুষও ছিলেন নিষিদ্ধের বিপক্ষে।

গণভোটের প্রস্তাবে পোশাকের ধরন উল্লেখ করা না হলেও মুসলিম নারীদের বোরকা বা নিকাবকে লক্ষ্য করেই প্রচার চালানো হয়।

প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখতে পারবেন না। রেস্তোরাঁ, স্টেডিয়াম, গণপরিবহন বা রাস্তায় হাঁটার ক্ষেত্রেও মুখ আবৃত করা পোশাক পরা যাবে না। তবে ধর্মীয় উপাসনালয়, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত ইস্যুতে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ করোনা থেকে রক্ষায় মাস্ক পরতে কোনো সমস্যা নেই।

সুইজারল্যান্ডের দুটি অঞ্চলে জনসমক্ষে মুখ ঢাকা পোশাক পরা নিষিদ্ধ। সে নিয়মটি সারা দেশে প্রযোজ্য হবে কি না, তা নিয়ে রোববার হয় গণভোট। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডে এই প্রস্তাবের কোথাও বোরকা, নিকাবের কথা আলাদা করে বলা না হলেও এর পক্ষের রাজনৈতিক প্রচারে মুসলমান নারীদের পোশাককেই সামনে আনা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ‘দ্য সুইস পিপলস পার্টি’ প্রস্তাবের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়।

তাদের বিলি করা একটি প্রচারপত্রে বোরকা পরা এক নারীর চিত্র ব্যবহার করে লেখা হয়েছে, ‘ইসলামি উগ্রবাদ থামাও।’ তবে সরকার ও সংসদ এ নিয়ে দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ছিল। এর মাধ্যমে অকারণ ইসলাম ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলেও মত তাদের।

বোরকা নিষিদ্ধের বিরোধীদের একটি প্রচারপত্রে বলা হয়, ‘অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও ইসলামভীতি ছড়ানো বোরকাবিরোধী আইনকে না বলুন।’

প্রস্তাবের বিরোধীদের ভাষ্য, মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করা যাবে না। এর পরিবর্তে যেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ পরিচয় নিশ্চিত হতে চাইবে সেসব ক্ষেত্রে কেউ মুখ ঢাকা পোশাক পরলেও চেহারা দেখানোর বাধ্যবাধকতা জারি করতে হবে।

প্রস্তাবটিতে যেসব কথা বলা হয়েছে সেগুলোকে ‘বর্ণবাদী; হিসেবে উল্লেখ করেছে মুসলমান নারীদের সংগঠন পার্পল হেডস্কার্ভস।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে সংগঠনটির মুখপাত্র ইনেস এল-শিখ বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে যা সমস্যা নয় সেটিকে একটি সমস্যা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ পুরো সুইজারল্যান্ডে মাত্র ৩০ জন নারী বোরকা পরেন।’

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৬ লাখ জনসংখ্যার সুইজারল্যান্ডে মাত্র পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ মুসলমান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত