সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ মে, ২০২১ ২০:৩১

পশ্চিমবঙ্গে ‘নিশ্চিহ্ন’ বামফ্রন্ট

টানা ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। ২০১১ সালে রাজ্যের শাসনক্ষমতা হারায় বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর এই জোটটি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৩২টি আসন পেলেও এবার কোনো আসনেই জিততে পারেনি সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ২৯২ আসনে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে ২১৫ আসন পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছে ৭৬ আসন। অন্য একটি আসনে জিতেছেন অন্য প্রার্থী। তবে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট পায়নি একটি আসনও।

অথচ ২০১৬ সালের নির্বাচনে ২৯৪ আসনের মধ্যে বাম ও কংগ্রেস জোট পেয়েছিল ৭৭ আসন। ভোট পেয়েছিল ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ।

২০১১ সালের নির্বাচনে হারার পরই বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল, নতুনদের জায়গা দেয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয় দলটি। এবারের নির্বাচনে হয়তো সেই দুর্নাম ঘোচাতেই তরুণ মুখদের সামনে আনা হয়েছিল।

বর্ধমানের জামুড়িয়া কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছিলেন ঐশী ঘোষ। দিল্লির জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রনেতা নির্বাচনি প্রচারে চমক সৃষ্টি করলেও ভোটে হেরেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের হেভিওয়েট আসন নন্দীগ্রামে বামেরা প্রার্থী করেছিল তরুণ নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির শুভেন্দু চক্রবর্তী। এই আসনে বিজেপির কাছে হেরেছে বামজোট।

এবারের নির্বাচনের ইশতেহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ওপরে জোর দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট। প্রার্থী তালিকা থেকেও এটি স্পষ্ট ছিল যে, দলটির টার্গেট তরুণ ভোটাররাই। তবে সেই টার্গেট খুব একটা কাজে আসেনি।

নির্বাচন সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করেছিল ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। মুসলিম ভোট টানতে দলটিকে সঙ্গে নিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। তবে ব্যর্থ হয়েছে এই কৌশলও।

ভোট শেষে শুক্রবার বামজোটের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রবীণ নেতা বিমান বসু।

বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকেই বুথ ফেরত নানা সমীক্ষায় বামদের শোচনীয় পরাজয়ের ইঙ্গিত মিলছিল।

বিমান বসুর পাঠানো সার্কুলারে সমীক্ষাকে নাকচ করে দিয়ে ভোট গণনার কাজে কর্মীদের কোনো রকম ঢিলেমি না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

বিমান বসু বলেছিলেন, ‘আট পর্বে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে সাত-আটটি সংস্থা এক্সিট পোল নিয়ে চর্চা করছে এবং ২৯২টি আসন নিয়ে অহেতুক মন্তব্য করেছে। কারা কতসংখ্যক মানুষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মন্তব্য করেছে এবং আনুমানিক ফলাফলের কথা বলেছে, তা জানা নেই, এ নিয়ে ব্যস্ততারও কোনো প্রয়োজন নেই।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বর্তমান জানিয়েছিল, ভোট গণনার ৪৮ ঘণ্টা আগে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত সমীক্ষার তথ্য বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের কর্মীদের একাংশের মধ্যে বেশ হতাশা তৈরি করেছে। এই হতাশা যাতে গণনার কাজে কোথাও প্রভাব না ফেলে, সে জন্য তড়িঘড়ি এই সার্কুলার দিয়েছে বামফ্রন্ট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত