সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ মে, ২০২১ ১১:২০

পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে সহায়তা চাইতে হতে পারে

বাংলাদেশের অর্থনীতি যে গতিতে এগুচ্ছে এবং পাকিস্তান যেভাবে পিছাচ্ছে তাতে করে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানকে সহায়তা চাইতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক এক উপদেষ্টা।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান সম্প্রতি পাকিস্তানের দ্য নিউজ ডটকমে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এমন মন্তব্য করেছেন।

আবিদ হাসান বলেছেন, পাকিস্তানের দুর্দশার কারণ দেশটি নিজেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নেতারা এই ভুল স্বীকার করতে চান না। বরং তারা শত্রুদেশ এবং বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন। সন্দেহ নেই, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য যেসব নীতি প্রণয়ন করে, তার মধ্যে অনেকগুলোই খুব বাজে চিন্তার ফসল। তারা সব সমস্যার জন্য এক সমাধান খুঁজে থাকে—সর্বরোগের মহৌষধ খোঁজার মতো ব্যাপার।

জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি পাকিস্তান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে মন্তব্য করে আবিদ হাসান মনে বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভুল নীতির কারণে—দায়িত্বজ্ঞানহীন, অযথাযথ ও আগুপিছু না ভেবে প্রণীত নীতির কারণে। সবচেয়ে বাজে দুটি কাজ হলো, অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উৎস থেকে পাওয়া ঋণ নিয়ে অতিরিক্ত ব্যয় এবং রপ্তানির তুলনায় অনেক বেশি আমদানি।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে মিল অনেক। ধর্ম, নৈতিক অবনমন, বিশৃঙ্খল রাজনীতি, সুশাসনের অভাব, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়া—এসব দিক থেকে দুই দেশের অনেক মিল। কিন্তু মাত্র দুই দশকে বাংলাদেশ সব সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। গত ২০ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৫০০ শতাংশ বেড়েছে।

আবিদ হাসান লিখেছেন, প্রতিটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের নিজস্ব বয়ান আছে। তবে যারা ভালো করে, তাদের সবার মধ্যে একটি অভিন্ন ব্যাপার দেখা যায়। সেটা হলো, ওয়াশিংটন কনসেনসাস নীতি মেনে চলা। রাজস্ব ও মুদ্রানীতির গভীরতা, উদারীকরণ, রপ্তানিতে জোর দেওয়া, দারিদ্র্য বিমোচনমুখী নীতি, বাণিজ্যে সরকারের ভূমিকা হ্রাস ইত্যাদি। আরেকটি কৌতূহলোদ্দীপক দিক হলো, যেসব দেশ ভালো করেছে, সেই সব দেশই উচ্চ মাত্রার দুর্নীতি ছিল।

বাংলাদেশের নীতিগত একটি দিক হলো ভোগের চেয়ে সঞ্চয়ে বেশি জোর দেওয়া। দেশটির সঞ্চয়ের পরিমাণ জিডিপির ৩০ শতাংশের মতো, যেখানে পাকিস্তানে তা মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। কিন্তু পাকিস্তান অতিরিক্ত ব্যয় করে ফেলেছে।

পাকিস্তান সরকারের ঋণ এখন সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৬ গুণ। সরকার ঋণ করার কারণে বেসরকারি খাত ঋণ করতে পারে না।

আবিদ হাসানের মত, বাংলাদেশের কাছ থেকে সহায়তা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি পাকিস্তান এড়াতে চাইলে যা করতে হবে তা হলো, বাংলাদেশের পথ অনুসরণ করা। সফলতার পথ বন্ধুর। দরকার রাজস্ব ও মুদ্রানীতিতে প্রজ্ঞার পরিচয় দেওয়া।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত