আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:০২

চীনে শক্তিশালী ভূমিকম্প, শতাধিক মৃত্যু

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৬ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১১৬ জন নিহত এবং ২২০ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাতে (জিএমটি ১৬:০০) গানসু প্রদেশ শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। প্রতিবেশী কুইনঘাই প্রদেশ থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

মাইনাস ১৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার হাড়হিম করা ঠাণ্ডায় খালি হাতে শত শত উদ্ধারকর্মী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন।

গানসুতে ভূমিকম্পের কয়েকঘণ্টা পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জিনজিয়াং প্রদেশ। সেখানে ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গানসুতে পূর্ণমাত্রায় উদ্ধার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

গানসু চীনের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চলগুলোর একটি। প্রদেশের জিশিশান কাউন্টি ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টার (সিইএনসি) এর তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।

মঙ্গোলিয়া সীমান্তে চীনের গানসু প্রদেশটি তিব্বতি এবং লোয়েস মালভূমির মধ্যে অবস্থিত।

চীনা হুই মুসলমানদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল লিনজিয়া হুই থেকেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

চীনা কর্তৃপক্ষ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ৬ দশমিক ২ বললেও ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) রেকর্ড অনুযায়ী এটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯।

ওই ভূমিকম্পের পর আরো প্রায় ১০ বার পরাঘাত অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভূমিকম্পের যেসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে এবং উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

মঙ্গলবার জিশিশান কাউন্টির স্থানীয় প্রশাসন থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে গানসুতে ১০৫ জন নিহত এবং আরো ৯৬ জন আহত হওয়ার খবর দেওয়া হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রায়াত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে আরো বলা হয়েছে, প্রতিবেশী কুইনঘাই প্রদেশে মারা গেছেন ১১ জন এবং আহত হয়েছেন ১২৪ জন।

স্থানীয় প্রশাসন থেকে যেখানে উদ্ধার কাজ চলছে তার আশেপাশে ভিড় না করতে লোকজনকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে জরুরি উদ্ধার কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় তাই সড়কগুলোকে যানজট মুক্ত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভূমিকম্পের পর পাহাড়ি ওই অঞ্চলটিতে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।

বেশ কয়েকটি টেটোনিক প্লেটের উপর চীনের অবস্থান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ইউরাশিয়ান, ইন্ডিয়ান এবং প্যাসেফিক প্লেট। যে কারণে চীনে মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্প হয়।

গত সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণপশ্চিমের সিচুয়ান প্রদেশে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।

১৯২০ সালে গানসুতে ভূমিকম্পে দুই লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। যেটি বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের একটি বলে বিবেচিত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত