সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:৪০

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি দম্পতি খুন: বড় ছেলের দায় স্বীকার

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান হোসেতে বাংলাদেশি দম্পতি খুনের ঘটনা উদঘাটিত হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। নিহত দম্পতির বড় ছেলে হাসিব গোলাম রাব্বি (২২) তার বাবাকে কয়েকটি গুলি করার কথা স্বীকার করেছে। তবে হাসিব তার মাকে কোনো গুলি করেনি বলেও জানিয়েছে সে।

হাসিবের স্বীকারোক্তির পর তার বিরুদ্ধে আদালতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করে সান হোসে পুলিশের সার্জেন্ট প্যাট্রিক গুয়ের। এতে হাসিবের জবানবন্দি উদ্ধৃত করে বলা হয়, একজন অপরিচিত লোক হাসিবকে মারধোর করে এবং তার বাবাকে গুলি করতে বাধ্য করে।

এদিকে হাসিবের ছোট ভাই ওমর গোলাম রাব্বি (১৭) জানিয়েছে, তার বড় ভাই-ই তার মা-বাবা দুইজনকে হত্যা করেছে। জবানবন্দিতে ওমর কোনো অপরিচিত লোকের কথা উল্লেখ করেনি বলে জানায় গুয়ের। মামলায় বড় ভাই গোলাম রাব্বিকে একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ক্যালিফোর্নিয়ার অঙ্গরাজ্যের সান হোসে শহরের নিজ বাড়ি থেকে প্রকৌশলী গোলাম রাব্বি (৫৯) ও তার স্ত্রী হিসাবরক্ষক শামিমা রাব্বির (৫৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘দুঃখিত, আমার প্রথম খুনটি ছিল বিরক্তিকর’।

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাদের দুই ছেলেকে শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) আটক করে পুলিশ। পরে জামিন অযোগ্য আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় তাদের। গুয়ের বলেন, বাবা গোলাম রাব্বীকে হত্যার পর হাসিব ওমরকে মৃতদেহ পর্দা দিয়ে ঢেকে দিতে বলে। এরপরই সে (হাসিব) তার মাকে হত্যা করে।

তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন গুয়ের। এর আগে কারাগারে থাকা অবস্থায় স্থানীয় গণমাধ্যম সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসিব তার ছোট ভাইকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে পুরো ঘটনা খুলে বলার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি পুরো ঘটনা সবাইকে জানাতে চাই, তবে আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়া তা বলবে না।’

হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত কর্মকর্তারা ওই বাড়ির দেয়ালে আরেকটি বার্তা দেখতে পান। তাতে লেখা, ‘তোমার মতো আমি মিথ্যাবাদী হতে পারব না। আমি ওদের (মা-বাবা) অজ্ঞাতে অথবা সম্মতি ছাড়া কাউকে ভালোবাসতে পারব না।’ রাব্বি দম্পতির লাশ যখন পাওয়া যায়, তখন থেকেই তাদের দুই ছেলে নিখোঁজ ছিলেন।

উল্লেখ্য, গোলাম রাব্বি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার বাসিন্দা। ১৯৭৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। নয় বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে পঞ্চম গোলাম রাব্বি। তার তিন বোন মারা গেছে। বাকি চার বোনই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। একমাত্র ভাই বাংলাদেশে বসবাস করছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত