সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৬ জুন, ২০১৬ ১০:৩০

ফ্লোরিডা হামলার সময় ৭০ জনের প্রাণ বাঁচিয়েছেন এই যুবক

ওমর মতিন ও ইমরান ইউসুফ- দু'জনেই তরুণ। একজনের বুলেটে প্রাণ গেছে ৫০ জনের।

সেই ঘটনায় অন্যজন সবার হৃদয়ে আসীন। তিনি যে ৬০ থেকে ৭০ জনের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডো ট্রাজেডির পর ইমরান ইউসুফ নায়ক বনে গেছেন। খবর ইয়াহু নিউজের।

গত রোববার অরল্যান্ডোর পালস নামক সমকামীদের নাইটক্লাবে হামলা করেন ওমর মতিন। তিনি অন্তত ৫০ জনকে গুলি করে হত্যা করে। পরে পুলিশের অভিযানে তারও মৃত্যু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক এই হামলায় দিন ২৪ বছর বয়সী নাবিক ইমরান ইউসুফ অনেকের জীবন বাঁচিয়েছেন।

প্রথম গুলির শব্দ শোনার পরই তিনি হামলার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর বার বন্ধ করে অনেককে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন ইমরান।

ইমরান ইউসুফ মার্কিন নৌবাহিনীর নাবিক ছিলেন। চাকরি সূত্রে সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন তিনি।

সদ্য নাবিকের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পালসে বাউন্সার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ইমরান। তাই প্রথম চার রাউন্ড গুলির শব্দ শোনার পরই তার বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে 'হাই ক্যালিবার' বন্দুক থেকে গুলি চলছে নাইটক্লাবে।

মুহূর্তে হামলার বিষয়টি বুঝতে পেরে যান ইমরান। ছুটে এসে ক্লাবের বহু সদস্যের প্রাণ বাঁচান সে রাতে।

ইমরানের সাহসিকতার কাহিনি এখন লোকের মুখে মুখে ঘুরছে। তাতে অবশ্য বেশ বিব্রতই তিনি। ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, 'আমায় অনেকেই নায়কের আসন দিচ্ছেন। কিন্তু আমি তখন যা করেছি, সেটা একটা ঘটনার প্রতিক্রিয়া মাত্র।'

এদিকে মার্কিন টেলিভিশন সিবিএসকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে দেন ইমরান ইউসুফ। তিনি জানান, হামলা টের পেয়ে আমি জোরে জোরে চেঁচাচ্ছি, দরজা খোল, দরজা খোল। কিন্তু কেউ এক চুল নড়ছে না। কারণ তারা সবাই তখন চরমভাবে ভিত। তখন আমি তাদের উদ্দেশে বললাম- এখন একটিই রাস্তা, আমরা সবাই এখানে একসঙ্গে মরব। অথবা বাঁচার পথ খুঁজব।

তিনি বলেন, এরপর আমিই প্রথম উদ্যোগী হলাম এবং একে একে অন্যদের সেখান থেকে একটি ছোট্ট দরজা দিয়ে বের করতে লাগলাম। সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে আমিই সেখান থেকে বের হয়ে দরজা বন্ধ করি।

কান্নারত ইমরান আরও বলেন, 'সত্যিকার অর্থে এখন আমার মনে হয়, হয়তো আরও মানুষের জীবন আমি বাঁচাতে পারতাম। কিন্তু পারিনি, অনেক মানুষকে সে মেরে ফেলল, অনেককে সে হত্যা করল।'

অরল্যান্ডোর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার রাতে ৫৩ জন আহত হন। আর কমপক্ষে ৪৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ইমরান ইউসুফ কমপক্ষে ৭০ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে তাদের নাইটক্লাব ছেড়ে পালাতে সাহায্য করেছিলেন।

ঘাতক মতিনকে কি মাঝে মধ্যেই দেখা যেত ওই নির্দিষ্ট ক্লাবে? ইমরান এ নিয়ে বিশেষ কিছু জানাতে পারেননি।

তবে ক্লাবের মালিকের তরফে তার মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, মতিন ওই নাইটক্লাবের সদস্য ছিলেন না। এক-আধবার হয়তো সে ওই ক্লাবে যেতে পারে, কিন্তু নিয়মিত সে পালসে যেত না।

অবশ্য ওমর মতিনের বর্তমান স্ত্রী নুরকে উদ্ধৃত করে এ খবরই বেরিয়েছে যে, পালসের সদস্য ছিল মতিন। নিয়মিত তার স্বামী সেখানে যেতও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত