ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০১ মে, ২০১৫ ০১:৫৫

কলেরা আতঙ্কে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত নেপাল

প্রলয়ংকারী ভূমিকম্পের পর আরেকটি বড় ঝুঁকির মধ্য দিয়ে দিন পার করছে নেপালের বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো, আর তা হল- কলেরা মহামারী।

বুধবার বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গতদের স্যানিটেশন অর্থাৎ সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে যদি অবিলম্বে কাজ শুরু করা না যায় এবং উন্নতমানের খাবার পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার বিধান দেয়া না হয়, তাহলে যে কোনো সময় মহামারী আকার ধারণ করতে পারে কলেরা। খবর সূত্র: টাইমস্ অব ইন্ডিয়া।

শনিবার ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারেরও বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এরই মধ্যে নতুন করে কলেরা মহামারীর আশংকায় সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা।

ভূমিকম্পে বিপুলসংখ্যক আহতদের চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। এ অবস্থা থেকে বের হওয়া না গেলে এর মধ্যেই নতুন করে অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে শংকা বিশেষজ্ঞদের। অতিরিক্ত মানুষ বোঝাই ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্বাসন শিবিরগুলোতে এ সংকট আরও বেশি, শয়ে শয়ে মানুষ একসঙ্গে থাকায় কলেরা, ডায়রিয়া ও আমাশয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও অতি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত।

নতুন করে এ ঝুঁকির ফল অনুধাবন করে রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন শিবিরে বসবাসরতদের প্রতি যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দেয়ালে দেয়ালে সতর্কীকরণ পোস্টার লাগানো হচ্ছে।

কাঠমান্ডুতে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক সমন্বয়ক অনু গৌতম জানান, যদি এসব শিবিরে এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে দীর্ঘদিন বসবাস করতে হয়, তাহলে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট দেখা দেবে।

রাজধানী কাঠমান্ডুর অন্যতম বড় শিবির তুনদিখেলে হাঁটতে গেলেই মলমূত্রের দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে সেখানকার মানুষের জন্য। শিবিরটিতে জরুরি শৌচাগার খুব বেশি নেই বলে মানুষজন খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে।

শিবিরটিতে হাতেগোনা কয়েকজন মুখ ঢেকে চলাচল করছে। শৌচাগারে দীর্ঘ সারি রয়েছে। খাবার পানীয়ের স্বল্পতার কারণে মানুষজন হাতের কাছে যে পানি পাচ্ছে, সেটাই পান করছে। ভালো খাবার খাওয়ার বা বিশ্রাম করারও সুযোগ নেই। এ দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে হাসপাতালে পড়ে থাকা বিপুলসংখ্যক শনাক্তবিহীন মৃতদেহ।

নেপালের স্বাস্থ্য গবেষণা পরিষদও সরকারকে রোগের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত