নিউজ ডেস্ক

০৭ মে, ২০১৫ ০৪:২১

ক্যামেরন, না মিলিব্যান্ড : ১০ ডাউনিং স্ট্রিট কার?

ক্যামেরন থাকছেন, নাকি মিলিব্যান্ড যাচ্ছেন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এমন ফায়সালা হচ্ছে ৭মে’র নির্বাচনে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডেভিড ক্যামেরন আছেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আর প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর বিপক্ষে লড়ছেন বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড।

নির্বাচন পূর্ব জনমত জরিপগুলো বলছে, প্রধান দুই দল কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির লড়াই হবে সমানে সমান। কোনো দলের এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে ছোট দল লিবারেল ডেমোক্র্যাট এবং ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টির (ইউকেআইপি) মতো দলকে সাথে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ঢুকতে হবে ক্যামেরন কিংবা মিলিব্যান্ডকে।

ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের আসন সংখ্যা ৬৫০টি। সরকার গঠনের জন্য দরকার ৩২৬টি। ১ মে ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ানের এক জরিপে বলা হয়, বিরোধীদল লেবার পার্টি ২৬৭টি এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ২৭৬টি আসন পেতে পারে।

জরিপে কনজারভেটিভরা এগিয়ে থাকলেও তাদের শরিক দল লিবডেম কিন্তু এবার অনেক পিছিয়ে আছে। লিবডেমের অবস্থা এতই নাজুক যে সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও পার্টি প্রধান নিক ক্লেগ নিজের আসনে বিজয়ী হবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বরং লেবার পার্টিকে সমর্থন দেয়ার ইঙ্গিত দেয়া এসএনপি (স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি) সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

জরিপের ফল অনুযায়ী লিবডেম ২৭টি আসন পেতে পারে। কিন্তু এসএনপি তাদের দ্বিগুণ অর্থাত্ ৫৫টি আসন পেতে পারে। জরিপের হিসাবে কনজারভেটিভ ও শরিক লিবডেম মিলে আসন হচ্ছে ৩০২টি, আর লেবার পার্টি ও এসএনপি মিলে আসন পাচ্ছে ৩২২টি। গত ২০১০ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি সর্বোচ্চ ৩০৭টি আসন পেয়েছিল।

অন্যদিকে, গতকাল বুধবার বিবিসির এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি পক্ষে ৩৪ শতাংশ, লেবার পার্টির পক্ষে ৩৩, ইউকেআইপি’র পক্ষে ১৪, লিবারেল ডেমোক্রেটিক ৮, গ্রিন পার্টি ৫ ও অনান্য দলের ৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী বড় দুই দলের কেউই সরকার গঠনে এককভাবে প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সরকার গঠন করতে জোট করতে হবে এসএনপি, ইউকেআইপি, লিবডেম বা গ্রিন পার্টির মতো ছোটো দলগুলোর সঙ্গে। এ দলগুলোর ওপর নির্ভর করেই কনজারভেটিভ পার্টি বা লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় বসতে হবে।

ভোটের মাঠে শেষ মুহূর্তে কী হবে, দোদুল্যমান ভোটাররা কোন দলকে বেছে নেবেন তা ভোটের পরই জানা যাবে। তবে বিবিসির ডেপুটি পলিটিক্যাল এডিটর জেমস ল্যান্ডেল বলেন, রাজনীতিক, জনমত যাচাইকারী ও গণমাধ্যমের নজর নির্বাচনে অনিশ্চিত কোন ফল আসলে তার প্রভাব কী হবে তার দিকে। এমনটা হলে বৃহস্পতিবার নির্বাচন প্রক্রিয়ার শেষ দিন হবে না। বরং এ দিন হতে পারে প্রক্রিয়ার হাফ-টাইম (অর্ধ সময়)।

এদিকে ব্রিটেনের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রবল সাড়া লক্ষ্যণিয়। কারণ এবার রেকর্ড সংখ্যক ১২জন বাংলাদেশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আলোচনায় এগিয়ে আছেন লেবার দলীয় বর্তমান এমপি রুশনারা আলী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং লেবার দলীয় আরেক প্রার্থি রূপা হক।

এবারের নির্বাচনে অপর বাংলাদেশি ব্রিটিশ প্রার্থীরা হচ্ছেন- বেকেনহাম আসনে লেবার পার্টির ব্যারিস্টার মেরিনা আহমেদ, ওয়েলউইন অ্যান্ড হাটফিল্ড আসন থেকে লেবার পার্টির ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, নর্থহ্যামটন সাউথ আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, সারের রায়গেইট ও বানস্টেড আসনে লেবার পার্টির আলী আখলাকুল, লুটন সাউথ থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটের আশুক আহমেদ, নর্থ ইস্ট হ্যাম্পশায়ার আসন থেকে লেবার পার্টির এমরান হোসাইন, স্কটল্যান্ডের এভারডিনশায়ারের বেনফ অ্যান্ড বুখান আসন থেকে লেবার পার্টির সুমন হক এবং ওয়েলসের আরফন আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের মোহাম্মদ সুলতান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত