১০ জুন, ২০১৭ ২০:৪৯
পাকিস্তানের এক বাবার সঙ্গে তার সন্তানরা
দীর্ঘ ১৯ বছর পর পাকিস্তানে সম্প্রতি হয়েছে আদমশুমারি করা হয়েছে। আর সেই শুমারির ফলাফল দেখে সরকারের চক্ষু চড়কগাছ!
১৯৯৮ সালের আদমশুমারিতে পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ। কিন্তু ২০১৭ সালের গণনায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ কোটিতে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলে পাকিস্তানে যে সংকট দেখা দেবে, তা নিয়ে চিন্তিত সরকার।
সম্প্রতি পাকিস্তানের জনসংখ্যা বৃদ্ধি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। যেখানে বলা হয়েছে, দেশটির মাত্র ৩ জন পিতারই সন্তান সংখ্যা প্রায় একশ’ হবে!
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এত সন্তান জন্ম দেয়ার পেছনে ওই ৩ পিতার যুক্তি ‘আল্লাহ দিয়েছেন’। কেউ মত দেন, ‘শত্রুদের ভয় দেখাতে মুসলমানদের বেশি বেশি সন্তান নেওয়া উচিত’।
তাদের অন্যতম পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ার বাসিন্দা গুলজার খান (৫৭) তার সন্তানদের দেখিয়ে এমন মন্তব্য করেন। তার চারপাশ ঘিরে তখন বসে ছিল নানা বয়সের ২৩ জন সন্তান। বাকি ১৩ সন্তান সেখানে উপস্থিত ছিল না। তার আরও একটি সন্তান আসন্ন বলে জানান তিনি।
তবে এই অত্যধিক সন্তান নিয়ে মোটেই বিচলিত নন গুলজার। তিনি জানান, এ সবই আল্লাহ দিয়েছেন। তা ছাড়া পারিবারিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্যও বেশি সন্তানের প্রয়োজন।
গুলজার খান বলেন, আল্লাহ এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। মানুষও তারই সৃষ্টি। তাহলে কেন আমি শিশু জন্মের নিয়মে বাধা দেব? এ সময় তিনি ইসলাম জন্মনিয়ন্ত্রণ সমর্থন করে না বলেও মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, তার এত সন্তান হওয়ায় সবাই মিলেই একটি পুরো ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে পারবে। এজন্যে তাদের কোনো বন্ধুর দরকার নেই।
এমন অধিক সন্তানের আরেক পিতা মাস্তান খান ওয়াজির (৭০)। তিনি আবার গুলজার খানের ১৫ ভাইবোনের মধ্যে অন্যতম। ভাইয়ের মতো তারও ৩ জন স্ত্রী রয়েছেন। সন্তান সংখ্যা ২২ জন। তাদের আবার রয়েছে একাধিক নাতি। তবে সেই সংখ্যাটা ওয়াজির নিজেও জানেন না!
আরেক পিতা জান মোহাম্মেদের স্ত্রী রয়েছেন ৩ জন। সন্তান সংখ্যা মোট ৩৮ জন। তিনি আবার ঠিক করে রেখেছেন এই ইনিংসে সেঞ্চুরি করবেন! জান মোহাম্মেদ বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটায় বাস করেন। গত বছর সংবাদমাধ্যম এএফপি-কে তিনি চতুর্থ বিয়ে আর ১শ’ সন্তান নেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
এনিডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি সেই ইচ্ছে প্রসঙ্গে জান মোহাম্মেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এখনও তাকে কেউ বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তিনি হতাশ। তবে আশা ছাড়েন নি তিনি। তার মতে, মুসলমান যত জন্মাবে, শত্রুরা তত ভয় পাবে। মুসলমানদের তাই বেশি বেশি সন্তান নেওয়া উচিত।
আপনার মন্তব্য