সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৫ জুলাই, ২০১৭ ১০:৫৩

লন্ডনে ক্রমশই বাড়ছে এসিড হামলা

লন্ডনে মোটরসাইকেলে চড়ে দুই ব্যক্তি মাত্র ৯০ মিনিটের মধ্যে পাঁচটি এসিড হামলা চালিয়েছে। লন্ডন পুলিশ বলেছে, এসিডদগ্ধ একজনের মুখের ক্ষতের অবস্থা গুরুতর। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে পূর্ব লন্ডনে এসব ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পাঁচটি হামলাই একই সূত্রে গাঁথা। একইসঙ্গে এসিডদগ্ধ দুইজনের মোটরসাইকেল চুরি গেছে।

খবরে বলা হয়, গুরুতর এই শারীরিক হামলা ও ডাকাতির অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে পূর্ব লন্ডনের একটি পুলিশ স্টেশনে নেওয়া হয়েছে।

৩২ বছর বয়সী এক মোটরসাইকেল চালককে দিয়ে হামলার শুরু। হামলাকারী ওই দুই জন কুইন্সব্রিজ রোডের হ্যাকনি রোড সংযোগে তার দিকে এগিয়ে যায়।

এরপরই দুই সন্দেহভাজন তার মুখে এসিড ছুঁড়ে মারে। এরপর এদের একজন তার মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যায়। ২০ মিনিটেরও কম সময় পরে সকাল ১০.৫০ মিনিটে ইসলিংটনের হাইবুরি কর্নারের আপার স্ট্রিট সংযোগে আরেক ব্যক্তির গায়ে এসিড ছুড়ে মারে ওই হামলাকারী যুগল। পরে উত্তর লন্ডনের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ব্যক্তিকে।

সকাল ১১.০৫ মিনিটে, দ্রুতগতি দুই হামলাকারী শোরেডিচ হাই স্ট্রিটে একব্যক্তিকে অ্যাসিড মারে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যক্তির ক্ষত গুরুতর নয়।

এর মাত্র ১৫ মিনিট পরই তারা আরেকটি হামলা চালায়। কেজনোভ সড়কে একব্যক্তি তাদের হামলার শিকার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার মুখের ক্ষত গুরুতর।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা স্যামুয়েল জানান, এসিড মারার পর নিজের মুখ ধরে যন্ত্রণায় ছটফট ও চিৎকার করছিলেন এই ব্যক্তি। হামলার পর অনেকে মানুষ এগিয়ে এসে তার মুখে পানি দিতে শুরু করে।

সর্বশেষ হামলার ঘটনা ঘটে ১১.৩৭ মিনিটে। চ্যাটসওর্থ সড়কে নিজের মোটরসাইকেলে বসে থাকা এক ব্যক্তির ওপর এসিড ছুঁড়ে তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারী দুইজন।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, তদন্ত চলছে। হ্যাকনি সিআইডির কর্মকর্তারা বিষয়টি তদন্ত করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি লন্ডনে এসিড হামলা বেড়ে গিয়েছে। চলতি বছর লন্ডনে ইস্টার মানডেতে একটি নাইট ক্লাবে জড়ো হওয়া মানুষজনের ওপর এসিড মারা হয়। দুই জন এতে অন্ধ হয়ে যান। বাকিদের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্যে জানা যায়, ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের রাজধানীতে ৪৫৮টি অ্যাসিড হামলা হয়, যেখানে তার আগের বছর হয়েছিল ২৬১টি। ইংল্যান্ডে এসিড হামলার ঘটনা ২০১২ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

এসব হামলার অধিকাংশই ঘটেছে লন্ডনে। এই শহরে ২০১০ সাল থেকে এক হাজার ৮০০ এর বেশি হামলায় দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়। প্রথমদিকে প্রতিশোধমূলক হামলায় এসিডের ব্যবহার হলেও পরে ধীরে ধীরে গাড়ি ডাকাতি ও ছিনতাইয়েও তা ব্যবহার করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি কারণে হামলাকারীরা প্রথম পছন্দ হিসাবে এসিডকেই বেছে নিচ্ছেন। প্রথমত, ছুরি নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ যতোটা গুরুতর, এসিড হামলার অভিযোগ  ততোটা নয়। তাছাড়া ছুরি হামলার চেয়ে এসিড হামলায় সাজাও কিছুটা কম হয়। দ্বিতীয়ত, এসিড হামলায় ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার সুযোগ তেমন থাকে না। একটি ছুরির তুলনায় এসিড হামলায় ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল নষ্ট করে ফেলা বেশি সহজ। তৃতীয়ত, এসিড খুবই সহজলভ্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত