ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২২ আগস্ট, ২০১৮ ১৯:৩৫

কোরবানির সেলফিতে উত্তর প্রদেশে নিষেধাজ্ঞা

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ঈদের কোরবানির ‘সেলফি’ তোলার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। রাজ্যের সব জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারিন্টেডেন্টদের নিয়ে এক ভিডিও কনফারেন্স করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, পশু কোরবানি দিয়ে কেউ যেন সেলফি তুলে সামাজিক মাধ্যমে তা পোস্ট না করেন। এ বিষয়ে প্রশাসনকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।

গতবছর থেকেই উত্তর প্রদেশে খোলা জায়গায় পশু কোরবানি দেয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে এবং কোরবানির পরে যাতে রক্ত নালা-নর্দমায় না ছড়াতে পারে, তার ওপরে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। এবার নতুন করে যোগ হলো কোরবানির আগে-পরে সেলফি তোলা বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা।

ভারতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে, অনেকেই কোরবানির ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে থাকেন; যেটা শুধু মুসলমানরা নয়, অনেক কম বয়স্ক বা অন্য ধর্মের মানুষজনেরও নজরে পড়ে। এ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কও চোখে পড়ছে গত কয়েক বছর ধরেই। তবে রাজ্য সরকার নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সেখানকার মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

খুর্শিদ আহমেদ নামের এক হোটেল মালিক জানান, কোরবানি তো নিয়ম অনুযায়ী আবদ্ধ জায়গাতেই করার কথা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেটাই করা হয়। আর কোরবানির সেলফি তোলা তো একেবারে হালের ফ্যাশান। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন্স পার্সোনাল ল বোর্ডের প্রধান শাইস্তা অম্বর লক্ষ্ণৌতে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন নারীদের জন্য।

তিনি বলেন, ‘খোলা জায়গায় কোরবানি দেয়া অথবা সেখানে যে রক্ত পড়ে থাকে, সেটা বেশ অস্বাস্থ্যকর। অনেকেই ওসব দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই এটা না করাই উচিত। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল এইসব নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়া।’

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শহর বলে পরিচিত গোরখপুরে যেখানে তার মন্দির, তার পেছনেই থাকেন মুহম্মদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঘেরা জায়গাতেই কোরবানি দেয়া হয়ে থাকে প্রায় সব ক্ষেত্রেই। জায়গাটা পরিষ্কারও রাখা হয়, পানি ঢালা হয় মাঝেমাঝেই। তবে কোরবানি দিলে কিছু রক্ত তো গড়িয়ে নালা-নর্দমায় যাবেই! কিন্তু তার জন্য এত রকমের নিষেধাজ্ঞা জারি করার কি আ-দৌ দরকার ছিল?’

গোরখপুরেরই আরেক বাসিন্দা পারভেজ পারওয়াজ মনে করেন যে, মুসলমানরা আগে থেকেই যেসব নিয়ম কানুন মেনে কোরবানি দেন, সেগুলোর ওপরেই আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এটা মুসলমানদের প্রতি একটা বার্তা দেয়া হচ্ছে বলেই তার মত। সূত্র: বিবিসি বাংলা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত