সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২২:৩৫

মুক্তিযুদ্ধের ছবি ব্যবহারের জন্যে ক্ষমা চাইল মিয়ানমার

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রকাশিত একটি বইয়ে ভুয়া ছবি ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চেয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ছবি দুটি তারা ‘ভুল করে’ প্রকাশ করেছে। খবর রয়টার্সের

সোমবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মুখপত্র মিন্দানাও ডেইলিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ভুলের জন্য পাঠক ও ওই ছবি দুটির আলোকচিত্রীদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।

এর আগে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রকাশিত বইয়ে ভুয়া তথ্য ও ছবি ব্যবহারের বিষয়টি ধরা পড়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানে।

রয়টার্স জানায়, ওই বইয়ে থাকা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও তথ্য ভুয়া। এতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানের বর্বরতার ছবিকে রাখাইনে রোহিঙ্গা কর্তৃক বৌদ্ধ নিধনের ছবি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।

শুক্রবার এ নিয়ে এক বিশেষে প্রতিবেদনে রয়টার্স বলে, গত জুলাইয়ে ‘মিয়ানমারের রাজনীতি ও সেনাবাহিনী: পর্ব ১’ (মিয়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড দ্য টাটমাডো: পার্ট ১) শিরোনামে ১১৭ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিভাগ।

ওই বইয়ে ১৯৪০ এর দশকে মিয়ানমারের দাঙ্গার অধ্যায়ে একটি ছবির বিবরণে বর্মী ভাষায় রোহিঙ্গাদের হাতে বৌদ্ধ হত্যার ছবি হিসেবে বোঝানো হয়েছে। তবে রয়টার্সের অনুসন্ধানে ছবিটি আসলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

বইটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সহিংসতার জন্য বাঙালিদের দোষারোপ করা হয়েছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বইটিতে আরও দুটি ভুয়া ছবি পাওয়া গেছে যেগুলো রাখাইন অঞ্চলের আর্কাইভ ছবি বলে দাবি করা হয়েছে। তবে রয়টার্সের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওই তিনটি ছবির মধ্যে দুটি তোলা হয়েছে বাংলাদেশ ও তানজানিয়ায়।

মিয়ানমারের রাখাইন ছেড়ে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের একটি ছবির ক্যাপশনে মিথ্যাচার করে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা।

গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে কঠোর অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গাদের ওপর এমন বর্বরতাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত